প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়,বর্ধমান,১৩নভেম্বর : বিধানসভা ভোটের ফল প্রকাশের পরবর্তিতে বিজেপি সমর্থকের মৃত্যুর ঘটনা নিয়ে আরও একটি খুনের মামলা রুজু করলে সিবিআই। এবার পূর্ব বর্ধমানের রায়নার বাসুদেবপুরের বিজেপি সমর্থক কার্তিক রুইদাসের (৫৯) ঝুলন্ত মৃতদেহ উদ্ধারের ঘটনা নিয়ে রুজু করলো খুনের মামলা।কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে তদন্তে নেমে সিবিআই এই খুনের মামলা রুজু করে। কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা মামলা রুজুর বিষয়টি বর্ধমান সিজেএম আদালতে জানালে আদালত এফআইআরটি নথিভুক্ত করেছে।
সিবিআই সূত্রে জানা গিয়েছে,রায়নার বাসুদেবপুর রায়পাড়ার বাসিন্দা কার্তিক রুইদাস গত ৫ মে সকাল ১০টা নাগাদ বাড়ি থেকে বের হন। ওইদিন বেলা ১টা নাগাদ বাড়ি থেকে কিছুটা দূরের পুকুর পাড়ে থাকা একটি নিমগাছ থেকে উদ্ধার হয় গালায় গামছার ফাঁস লাগানো অবস্থায় থাকা কার্তিক রুইদাসের ঝুলন্ত মৃতদেহ । খবর পেয়ে পুলিশ দেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠায়।পুলিশ অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে। মানসিক অসুস্থতার কারণে কার্তিক বাবু আত্মঘাতী হয়েছেন বলে প্রাথমিকভাবে জানায় পুলিশ । যদিও মানসিক অবসাদে আত্মহত্যার কথা মানতে চায়নি মৃতার পরিবারের লোকজন। পরিবারের তরফে এনিয়ে হাইকোর্ট মামলা দায়ের হয়। হাইকোর্ট ঘটনার তদন্তভার সিবিআইয়ের হাতে তুলে দেয় ।
মৃতের ছেলে প্রদীপ রুইদাস সিবিআইকে জানিয়েছেন,২ মে বিধানসভা ভোটের ফল প্রকাশের দিন দুপুরে তৃণমূলের কয়েকজন তাঁদের বাড়িতে হামলা চালায়। বাড়িতে ভাঙচুর করে । ভয়ে সেদিন রাতে তিনি এক আত্মীয়ের বাড়িতে চলে যান। পরের দিন সকালে তাঁর বাবা তাঁকে ফোন করে বাড়িতে ফিরতে বলেন। সেইমতো তিনি বাড়ি ফিরে আসেন। ওইদিন রাতে ফের তাঁদের বাড়িতে ভাঙচুর চালানো হয়। তাঁর মাকে প্রচণ্ড মারধর করা হয়। মারধরে তাঁর মা সংজ্ঞা হারান। পরের দিন রাত ১২টা নাগাদ দরজা ভেঙে কয়েকজন বাড়িতে ঢোকে। পরিবারের লোকজনকে দেখে নেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়। এতে পরিবারের লোকজন আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। পরের দিন সকালে তাঁর বাবা কাউকে কিছু না বলে বাড়ি থেকে বেরিয়ে পড়েন। পরে বেলায় তাঁর বাবা কার্তিক রুইদাসের ঝুলন্ত মৃতদেহ উদ্ধার হয়। মানসিক অসুস্থতার কারণে তাঁর বাবা আত্মঘাতী হয়েছেন বলে পুলিশ তাঁকে দিয়ে জোরকরে লিখতে বাধ্য করে। যদিও প্রদীপ অভিযোগ করেছেন, তাঁর বাবা কার্তিকবাবুকে মেরে আত্মহত্যা বলে চালাতে দেহ গাছে টাঙিয়ে দেওয়া হয়েছিল। খুনের মামলা রুজুর বিষয়টি নিয়ে সিবিআইয়ের কেউই মুখ খুলতে চায়নি। একই ভাবে রায়না থানার পুলিশও কোনও মন্তব্য করতে চায়নি ।।