এইদিন ওয়েবডেস্ক,ইংরেজবাজার(মালদা),১০ ডিসেম্বর : রেল দপ্তরে চাকরি করে দেওয়ার নামে প্রতারণার অভিযোগে মালদা ডিআরএম অফিস চত্বর থেকে দুই যুবককে আটক করল আরপিএফ । পরে মালদা জেলার চাঁচোল-১ ব্লক অফিসের এক মহিলা কর্মীর অভিযোগের ভিত্তিতে তাদের গ্রেফতার করে ইংরেজবাজার থানার পুলিশ । পুলিশ জানিয়েছে ধৃতদের নাম আজাদ কুমার ও মহম্মদ ঈসা খান । তাদের বাড়ি বিহারের পাটনা জেলায় ।
জানা গেছে,চাঁচোল-১ ব্লকের ওই মহিলা কর্মীর নাম রুমা পান্ডে । চাঁচোলের বাসিন্দা ওই মহিলা ব্লক অফিসের মাইনরিটি বিভাগের কর্মী । রুমাদেবী বলেন, ‘আমাদের ব্লক অফিসের এক স্টাফের মাধ্যমে ওদের সঙ্গে আমার পরিচয় হয় । ওরা আমার ছেলে জ্যোতির্ময়কে রেল বিভাগের গ্রুপ-সি গুডস গার্ড পদে চাকরি পাইয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেয় । প্রথমে ওরা ১২ লক্ষ টাকা দাবি করে । আমরা রাজি না হওয়ায় ৬ লাখে রফা হয় । তার মধ্যে আমি ওদের অ্যাকাউন্টে ১ লাখ ১৫ হাজার টাকা জমা করে দিই । টাকা পাওয়ার পর ওরা আমার ছেলের ই-মেলে নিয়োগ পত্রের একটি পিডিএফ ফাইল পাঠিয়ে দেয় । বাকি ৫ লাখ টাকা জয়েনিংয়ের দিন দেওয়ার কথা ।’ তিনি বলেন, ‘বিগত ৭ দিন ধরে ছেলের জয়েনিংয়ের নামে ওরা আমাদের ভাঁওতা দিয়ে আসছে । ওদের কথামত গত বুধ, বৃহস্পতি,সোম ও মঙ্গলবার মালদা ডিআরএম অফিসে এসে আমাদের ঘুরে যেতে হয়েছে । তখন আমরা বুঝে যাই আমরা প্রতারণার শিকার হয়েছি । এদিন শুক্রবার ওরা ফের আমাদের ডিআরএম অফিসে আসার জন্য বলে ।’
জানা গেছে,প্রতারকদের কথামত মালদা ডিআরএম অফিসে আসেন রুমা পান্ডে ও তাঁর ছেলে জ্যোতির্ময় । তবে সঙ্গে করে বেশ কিছু স্থানীয় লোকজনদের নিয়ে আসেন রুমাদেবীরা । ওই সমস্ত লোকজন ডিআরএম অফিসের আশপাশে লুকিয়ে অপেক্ষা করতে থাকে ৷ ইতিমধ্যে জ্যোতির্ময়কে বাইকে করে স্থানীয় একটা হোটেলে নিয়ে যায় প্রতারকদের এক প্রতিনিধি । সেখানে তাকে কিছু কাগজপত্রে স্বাক্ষর করিয়ে নেয় দুই প্রতারক । তারপর ওরা জ্যোতির্ময়কে ডিআরএম অফিসের গেটের সামনে নিয়ে আসে । আর তখনই রুমাদেবীর পরিচিত লোকজন সেখানে জড়ো হয়ে যায় । এদিকে বেগতিক বুঝে সেখান থেকে চম্পট দেওয়ার চেষ্টা করে আজাদ কুমার ও মহম্মদ ঈসা খান । কিন্তু স্থানীয় লোকজন তাদের ধরে ফেলে । তাদের তুলে দেওয়া হয় রেল পুলিশের হাতে । পরে মহিলার অভিযোগের ভিত্তিতে ওই দুই প্রতারককে গ্রেফতার করে ইংরেজবাজার থানার পুলিশ ।
পুলিশ সুত্রে জানা গেছে,ধৃতদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশ জানতে পারে এই চক্রের মূল পান্ডা পান্ডা ব্যান্ডেলের বাসিন্দা কামেশ্বর সিংহ জনৈক এক ব্যক্তি । পুলিশ তার সন্ধান চালাচ্ছে । পাশাপাশি এই চক্রে আর কেউ যুক্ত আছে কিনা তা তদন্ত করে দেখছে পুলিশ ।।