দিব্যেন্দু রায়,ভাতার(পূর্ব বর্ধমান),০৮ ডিসেম্বর : বড় বউমা ও দুই নাতি মিলে রীতিমতো নির্যাতন শুরু করে দিয়েছে । কেড়ে নিচ্ছে বিধবা ভাতার টাকা । আর ‘নেপথ্যে প্রশ্রয়’ দিচ্ছেন বিধায়ক । এই অভিযোগ তুলে অশীতিপর এক বিধবা বৃদ্ধার নামে চিঠি পাঠানো হয়েছিল মুখ্যমন্ত্রীর কাছে । চিঠিতে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আত্মহত্যার অনুমতি চাওয়া হয়েছে
। এরপর মুখ্যমন্ত্রীর দপ্তর থেকে নির্দেশ পেয়ে ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে চিঠিটি আদপে ভুয়ো । পূর্ব বর্ধমান জেলার ভাতার থানার খেড়ুর গ্রামের বাসিন্দা অলকা সামন্ত (৮৮) নামে ওই বৃদ্ধা সাফ জানিয়ে দেন তিনি ওই ধরনের কোনও চিঠিই পাঠাননি । তাহলে কে পাঠালো ওই চিঠি ? তার উদ্দেশ্যই বা কি ? এই প্রশ্ন তুলে পুলিশের কাছে তদন্তের দাবি জানিয়েছেন ভাতারের বিধায়ক মানগোবিন্দ অধিকারী । চিঠির উৎসের সন্ধান চালাতে শুরু করে দিয়েছে পুলিশ । এদিকে এই ভুয়ো চিঠির জেরে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায় ।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে,সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রীর দপ্তর থেকে ভাতার থানার পুলিশের কাছে একটি চিঠি পাঠিয়ে ঘটনার তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয় । ওই চিঠিটি আদপে বৃদ্ধা অলকা সামন্তর নাম করে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে পাঠানো হয়েছিল । তাতে লেখা আছে, ‘আমার বড় পুত্রবধূ দুই নাতি আমার ওপর নির্যাতন চালাচ্ছে ৷ ওরা আমার বিধবাভাতার টাকা কেড়ে নেয় । দলিল হাতিয়ে নিয়েছে । আর এর পিছনে প্রশ্রয় রয়েছে বিধায়ক মানগোবিন্দ অধিকারীর । তাই আমাকে আত্মহত্যার অনুমতি দেওয়া হোক ।’ এদিকে উপর মহল থেকে নির্দেশ পেতেই এদিন বুধবার ওই বৃদ্ধার বাড়িতে যায় ভাতার থানার পুলিশ । কিন্তু বৃদ্ধা পুলিশকে জানিয়ে দেন তিনি আদপেই ওই ধরনের কোনও চিঠি পাঠাননি ।
জানা গেছে,খেড়ুর গ্রামের বাসিন্দা অলকা সামন্তর স্বামী বহু দিন আগে মারা গেছেন । তাঁদের তিন মেয়ে ও দুই ছেলে । সকলের বিয়ে হয়ে গেছে । বড় ছেলের কাছে থাকেন অলকাদেবী । তাঁর আদর যত্নের কোনও খামতি নেই । ছেলে,বউমা বা নাতিদের বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগই নেই বলে জানিয়েছেন ওই বৃদ্ধা । বরঞ্চ সকলের প্রশংসায় পঞ্চমুখ তিনি । তাহলে মুখ্যমন্ত্রীর দপ্তরে চিঠি পাঠালো কে ? ভাতারের বিধায়ক মানগোবিন্দ অধিকারী বলেন, ‘আমার নামে অপপ্রচার করার উদ্দেশ্যেই কেউ বা কারা ওই চিঠি পাঠিয়েছে । চিঠির উৎস খুঁজে বের করার জন্য আমি পুলিশের কাছে আবেদন জানিয়েছি ।’।