এইদিন ওয়েবডেস্ক,ইসলামাবাদ,০৪ ডিসেম্বর :
শুক্রবার পাকিস্তানের শিয়ালকোটে শ্রীলঙ্কার নাগরিক প্রিয়ন্তা কুমারাকে(Priyantha Kumara)
ধর্মনিন্দার অভিযোগে নির্মমভাবে হত্যা করার কয়েক ঘণ্টা পর ক্যামেরার সামনে সগর্বে অপরাধের কথা স্বীকার করল ঘাতকরা । অভিযুক্তদের এই ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ইতিমধ্যে ভাইর্যাল হয়েছে । ভিডিওতে তাদের বলতে শোনা গেছে, ‘একটি কাগজে হোসেনের নাম লেখা ছিল । উনি সেই কাগজটা ছিঁড়ে ডাস্টবিনে ফেলে দিলেন । আমরা তা সহ্য করতে পারিনি । এই বিষয়ে আমি আমার সহকর্মীকে জানিয়েছিলাম । এমনকি প্রশাসনের সঙ্গেও কথা বলেছি । আমরা একত্রিত ছিলাম । আমরা তাকে তেল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দিলাম ।’ সেই সঙ্গে বছর ত্রিশের ওই অভিযুক্ত যুবক বলেন, ‘যে কেউ একই আচরণ করবে তাদের একই দশা হবে । আমরা নবী মুহাম্মদের জন্য আমাদের জীবন উৎসর্গ করতে প্রস্তুত ।’
প্রসঙ্গত,প্রিয়ন্তা কুমারাকে নৃসংসভাবে পিটিয়ে মারার ঘটনার পর একাধিক ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে । একটি ভিডিওয় দেখা গেছে রাস্তার মাঝে ওই শ্রীলঙ্কার নাগরিকের জ্বলন্ত দেহ ঘিরে উল্লাস করছে হাজার খানেক মানুষ । উপস্থিত অনেককে ভিডিও রেকর্ডিংয়ের পাশাপাশি সেলফি পর্যন্ত তুলতে দেখা গেছে । সেই সময় দু’একজন পাকিস্থানি পুলিশকে খালি হাতে ভিড় সামলাতে দেখা গেছে । সোশ্যাল মিডিয়ার দৌলতে নৃসংস ঘটনার কথা প্রকাশ্যে আসতেই নিন্দার ঝড় ওঠে গোটা বিশ্ব জুড়ে ।
এদিকে শ্রীলঙ্কা সরকারের কূটনৈতিক চাপে প্রিয়ন্তা কুমারার হত্যাকারী কট্টরপন্থীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হয় পাকিস্থান । অভিযুক্তদের ধরতে পাকিস্থানের পাঞ্জাব প্রদেশের পুলিশ ১০ জনের একটি তদন্তকারী দল গঠন করে । তারপর মূল অভিযুক্ত ফারহান ইদ্রিসকে গ্রেফতার করে পুলিশ । এছাড়া সিসিটিভি ফুটেজের সুত্র ধরে ঘটনায় জড়িত আরও ১০০ জনকে গ্রেফতার করা হয় । শনিবার অন্যতম মূল অভিযুক্ত তালহা নামে আরও এক যুবককে গ্রেফতার করেছে । তার বিরুদ্ধে জনতাকে উসকানি দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে ।
শ্রীলঙ্কার এমপি তথা প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপক্ষের ছেলে নমল রাজাপক্ষ ট্যুইটারে লিখেছেন, ‘পাকিস্তানে চরমপন্থী জনতা দ্বারা প্রিয়ন্তা কুমারাকে নৃশংসভাবে হত্যা করার কারন বোধগম্য নয় । যদিও আমি অভিযুক্তদের বিচারের আওতায় আনার জন্য আমি প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের প্রশংসা করি । আমাদের মনে রাখা উচিত যে চরমপন্থী শক্তিগুলিকে স্বাধীনভাবে কাজ করার অনুমতি দেওয়া হলে এটি যে কারও সাথেই ঘটতে পারে ।’।