এইদিন ওয়েবডেস্ক,মালদা,০৪ ডিসেম্বর : যুবতীকে খুনের অভিযোগে তাঁর প্রেমিককে গ্রেফতার করল মালদা জেলার পুখুরিয়া থানার পুলিশ । ধৃতের নাম তারিকুল আলম । তার বাড়ি রানীনগর এলাকায় । প্রাথমিক জেরায় সে খুনের কথা কবুল করেছে বলে পুলিশ সুত্রে জানা গেছে ৷ শনিবার ধৃতকে চাঁচোল মহকুমা আদালতে পেশ করে সাত দিনের জন্য নিজেদের হেফাজতে চেয়ে আবেদন জানায় পুলিশ । অভিযুক্তের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানিয়েছেন মৃত যুবতী নাসিমা খাতুনের (২৩) পরিবারের লোকজন।
জানা গেছে,নাসিমা খাতুনের বাড়ি পুকুরিয়া থানার পরানপুর এলাকায় । তিনি কলেজে পড়াশোনা করতেন । অন্যদিকে তারিকুল আলম পরিযায়ী শ্রমিকের কাজ করে । সে বিবাহিত । গত মাসের ৩০ তারিখে সকালে মালদা জেলার পুকুরিয়া থানার খৈলসনা গ্রামের একটি আমবাগানে নাসিমা খাতুনের রক্তাক্ত ক্ষতবিক্ষত দেহ পড়তে থাকতে দেখে স্থানীয় লোকজন । খবর পেয়ে পুলিশ মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায় ।
মৃতার আত্মীয় মেহেদুল হক জানান, আগের দিন অর্থাৎ ২৯ নভেম্বর বিকেলে মাসির বাড়ি যাওয়ার নাম করে বাড়ি থেকে বেড়িয়েছিলেন নাসিমা । কিন্তু সে বাড়ি না ফিরলে রাত্রি ৮ টা নাগাদ নাসিমার মোবাইলে ফোন করে তার ভাইয়ের স্ত্রী । তখন নাসিমা জানায় রাতে তার বাড়ি ফেরা অনিশ্চিত । বাড়ির সকলে যেন খাওয়া দাওয়া করে শুয়ে পড়ে । এরপর রাতের দিকে নাসিমার ফোনে বাড়ির লোকজন বারবার ফোন করেও পায়নি । তখন নাসিমার মোবাইল ফোনের সুইচ অফ ছিল । পরের দিন দেহ উদ্ধারের পর থানায় খুনের অভিযোগ দায়ের করা হয় । অভিযোগ পেতেই পুখুরিয়া থানার ওসি গৌতম চৌধুরীর নেতৃত্বে তদন্তে নামে পুলিশ ।
পুলিশ সুত্রে জানা গেছে,যুবতীর মৃতদেহের পাশেই পড়েছিল তাঁর মোবাইল ফোনটি । পুলিশ ওই মোবাইল ফোন খতিয়ে দেখতেই সামনে আসে রানীনগর এলাকার বাসিন্দা তারিকুল আলামের নাম । শেষে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য শুক্রবার রাতে বাড়ি থেকে তাকে আটক করে পুলিশ । পুলিশের জেরায় সে খুনের কথা কবুল করলে রাতের দিকে তাকে গ্রেফতার করা হয় ।
জানা গেছে,ধৃতের কাছ থেকে পুলিশ জানতে পারে
মাস তিনেক আগে কেরালায় শ্রমিকের কাজ করার সময় সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে নাসিমা খাতুনের সঙ্গে পরিচয় থেকে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে তারিকুল আলমের । সে যে বিবাহিত তখন তা নাসিমার কাছে গোপন করেছিল । সম্প্রতি তারিকুল বাড়ি ফিরে এলে তাদের সম্পর্ক আরও ঘনিষ্ঠ পর্যায়ে চলে যায় । আর এরপর থেকেই বিয়ের জন্য ক্রমাগত চাপ দিতে শুরু করেছিল নাসিমা । তখন বাধ্য হয়ে সে বিবাহিত হওয়ার কথা নাসিমাকে জানায় । কিন্তু তাতেও সে বিয়ে করতে রাজি হয়ে যায় । তার এই নাছোড় মানসিকতার জন্যই শেষে খুনের পরিকল্পনা করে তারিকুল ।
ধৃতকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ জানতে পেরেছে, ২৯ নভেম্বর বিকেলে নাসিমা খাতুনকে ফোন করে পুখুরিয়া থানার খৈলসনা গ্রামের আমবাগানে আসতে বলে তারিকুল আলম । সে নাসিমাকে ফের নিজের বিবাহিত হওয়ার কথা জানিয়ে তাকে বিয়ে করতে পারবে না বলে সাফ জানিয়ে দেয় । কিন্তু তার পরেও নাসিমা বিয়ের জন্য বারবার চাপ দিতে থাকে । তখন তারিকুল লুকিয়ে রাখা একটি চাকু বের করে নাসিমার উপর মুহুর্মুহু হামলা চালায় । নাসিমা রক্তাক্ত অবস্থা মাটিয়ে লুটিয়ে পড়লে সেখান থেকে চম্পট দেয় খুনি প্রেমিক ।।