এইদিন ওয়েবডেস্ক,হায়দ্রাবাদ,০১ ডিসেম্বর : বছর ৩১-এর এক বিবাহিত মহিলা ও প্রায় সমবয়স্ক এক যুবক হাসপাতালে সুইপারের কাজ করতেন । সেই সুত্রে পরিচয় । ক্রমে দু’জনের মধ্যে গড়ে ওঠে প্রেমের সম্পর্ক । এদিকে মহিলার স্বামী তাঁদের সম্পর্ককে সন্দেহের চোখে দেখতে শুরু করেছিলেন । তাই মাঝে মধ্যেই তিনি স্ত্রীকে শাসন করতেন । আর স্বামীর এই শাসনের কথা মহিলা তাঁর প্রেমিককে এসে সব জানিয়ে দিত । এদিকে প্রেমিকাকে শাসন করার জন্য চরম ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে প্রেমিক । শেষে আক্রোশ বসত একদিন সে প্রেমিকার স্বামীকে খুন করে । তারপর পুলিশের হাতে ধরা পড়ার ভয়ে মৃতদেহের সাতটি টুকরো করে বিভিন্ন জায়গায় ফেলে দিয়ে আসে অভিযুক্ত যুবক । নৃসংস এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনাটি ঘটেছে তেলেঙ্গানার পেড্ডাপ্ললি (Peddapalli) জেলার অন্তর্গত রামাগুন্ডাম (Ramagundam) এলাকায় । মৃতের নাম কে শঙ্কর । খুনের ঘটনার দিন দুয়েক পর তাঁর দেহাংশ রামাগুন্ডামের বিভিন্ন জায়গা থেকে উদ্ধার হওয়ার পর মূল অভিযুক্ত পি রাজু ও তার প্রেমিকাকে গ্রেফতার করে পুলিশ । প্রমান লোপাটের জন্য লাশ টুকরো টুকরো করে পাচারের আইডিয়া একটি তেলেগু সিনেমা থেকে ওই প্রেমিক যুগল পেয়েছিল বলে পুলিশ ধৃতদের জেরা করে জানতে পেরেছে ।
একটি সর্বভারতীয় সংবাদ মাধ্যমের প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে,রাজু রামাগুন্ডামের এনটিপিসি হাসপাতালের একজন ঝাড়ুদার । একই হাসপাতালে কাজ করতেন কে শঙ্করের স্ত্রী । শঙ্করের স্ত্রী রাজুর সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েছিলেন বলে অভিযোগ । গত ২৫ নভেম্বর রাতের দিকে হঠাৎ করে বাড়ি থেকে বেড়িয়ে নিখোঁজ হয়ে যান শঙ্কর । ছেলে বাড়ি না ফেরায় পরের দিন শঙ্করের মা স্থানীয় থানায় একটি নিখোঁজ ডাইরি করেন । এর ঠিক দিন দুয়েক পর অর্থাৎ ২৭ নভেম্বর মাল্লায়ালপল্লি (Mallayalpally) ক্রসরোডে এনটিপিসি কুলিং টাওয়ারের কাছে শঙ্করের কাটা মাথা এবং হাত খুঁজে পায় পুলিশ । খবর পেয়ে শঙ্করের মা ছেলের কাটা দেহাংশ শনাক্ত করেন ৷ পুত্রবধূ ও তার প্রেমিক এই ঘটনায় জড়িত বলে পুলিশের কাছে সন্দেহ প্রকাশ করেন মৃতের মা । এদিকে বেগতিক বুঝে গত শনিবার বাইকে চড়ে করিমনগর শহরে পালানোর চেষ্টা করে রাজু । কিন্তু পুলিশ তাঁকে ধরে ফেলে । শেষ পর্যন্ত পুলিশের জেরার মুখে সে খুনের কথা কবুল করে ।
পুলিশ সুত্রে খবর,পুলিশের জেরায় রাজু জানায় তাঁর সঙ্গে তাঁর সহকর্মীর সম্পর্ককে সন্দেহের চোখে দেখত সহকর্মীর স্বামী শঙ্কর । তার জন্য শঙ্কর প্রায়ই তাঁর স্ত্রীকে হয়রানি করত । তাঁর প্রেমিকা এসে সব কথা জানাত । শেষে তারা শঙ্করকে পৃথিবী থেকে চিরতরে সরিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করে ।
জানা গেছে,পুলিশি জেরায় রাজু কবুল করে খুনের উদ্দেশ্যে গত ২৫ নভেম্বর রাতে আলোচনার অজুহাতে শঙ্করকে সে নিজের বাড়িতে ডেকে পাঠায় । শঙ্কর বাড়িতে এলে সে তাঁকে আকন্ঠ মদ্যপান করায় । শঙ্কর নেশায় বুঁদ হয়ে পড়লে সে একটা বিয়ারের বোতল দিয়ে শঙ্করের মাথায় বারাংবার আঘাত করে । শঙ্কর নিস্তেজ হয়ে পড়লে মৃতদেহের সাতটি টুকরো করে বিভিন্ন জায়গায় ফেলে দিয়ে আসে রাজু । কিন্তু এত সতর্কতা সত্ত্বেও রাজু ও তাঁর প্রেমিকা ঢেকে রাখতে পারেনি তাঁদের এই নৃসংস অপরাধ । শেষ পর্যন্ত পুলিশ তাঁদের দু’জনকে গ্রেফতার করে । ছেলের হত্যাকারীদের ফাঁসির দাবি জানিয়েছেন মৃতের মা ।।