শেখ মিলন,ভাতাড়,১১ ডিসেম্বর ঃ ছেলের স্নায়ুর রোগ । যদিও ভিন রাজ্য চিকিৎসা করানোর পর বর্তমানে সে সুস্থ । তা সত্ত্বেও ছেলের চিন্তায় সর্বদা মনমরা হয়ে থাকতেন মা । শেষ পর্যন্ত মানসিক অবসাদে আত্মঘাতী হলেন বছর ত্রিশের ওই গৃহবধু । মর্মান্তিক এই ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব বর্ধমান জেলার ভাতার থানা এলাকার কাপশোর গ্রামে । মৃতার নাম বুল্টি ঘোষ । শুক্রবার সকালে শ্বশুরবাড়ির বারান্দায় তাঁকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পায় পরিবারের লোকজন । খবর পেয়ে ভাতাড় থানার পুলিশ গিয়ে দেহটি উদ্ধার করে আনে ৷ পরে দেহটি ময়নাতদন্তের জন্য বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয় ।
জানা গেছে,ভাতাড় থানার ঝিকরডাঙ্গা গ্রামের বাসিন্দা উজ্জ্বল ঘোষ ও মিতা ঘোষের মেয়ে বুল্টি । তাঁরা দুই বোন । বছর ১৪ আগে কাপশোর গ্রামের বাসিন্দা পেশায় গোপালক তরুন ঘোষের সঙ্গে তাঁর দেখাশোনা করে বিয়ে হয় । তাঁদের ১৩ বছরের একটি ছেলে ও বছর দেড়েকের একটি মেয়ে রয়েছে । বুল্টিদেবীর দেওর বরুনের সঙ্গে তাঁর বোন মান্তুর বিয়ে হয়েছে । তরুনবাবু ও তাঁর ভাই যৌথ পরিবারে থাকেন । দু’তলা বাড়ির নিচের তলায় থাকেন তরুনবাবু। উপর তলায় বসবাস করেন তাঁর ভাই ।
মৃতার বোন মান্তুদেবী জানিয়েছেন, এদিন ভোর প্রায় সাড়ে তিনটে নাগাদ তিনি ঘুম থেকে ওঠেন । তারপর ঘরের দরজা খুলতেই তাঁর দিদিকে বারান্দায় ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পান ।
মৃতার মা মিতা ঘোষ বলেন, ‘বড় মেয়ের ছেলে শুভদীপের স্নায়ুর সমস্যা দেখা দিয়েছিল । তার জন্য মাস তিনেক আগে তাকে ব্যাঙ্গালোরে চিকিৎসা করাতে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। চিকিৎসার পর নাতি ভালোই ছিল। কিন্তু তা সত্ত্বেও আমার মেয়ে নাতির রোগ নিয়ে খুব দুশ্চিন্তা করত । সারাদিন মনমড়া হয়ে থাকতো । শেষ পর্যন্ত মেয়ে যে এমন কাজ করবে কল্পনাও করতে পারিনি৷’
জানা গেছে,মান্তুদেবীদের ঘরের ঠিক সামনে বারান্দায় ঝুলন্ত অবস্থায় দেখা যায় বুল্টিদেবীকে । এদিন ভোরে ঘর খুলতেই এই দৃশ্য দেখে চিৎকার করে ওঠেন মান্তুদেবী । তাঁর চিৎকার শুনে বাড়ির লোকজন সব উঠে পড়ে । তারপর বুল্টিদেবীকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় । কিন্তু চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষনা করেন । পরে পুলিশ দেহটি ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায় । মর্মান্তিক এই ঘটনায় শোকস্তব্ধ গ্রাম।।