এইদিন ওয়েবডেস্ক,মঙ্গলকোট(পূর্ব বর্ধমান),২১ জানুয়ারী : ৯ মাসের শিশুকন্যাকে কোলে নিয়ে শুকনো ডালপালার জ্বালানিতে উনানে রান্না করছিলেন বধূ । সেই সময় বধূর শাড়িতে আগুন ধরে যায় । মা-মেয়ে দু’জনেই গুরুতর অগ্নিদগ্ধ হয় । দু’জনকেই তড়িঘড়ি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল । মা আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালের চিকিৎসাধীন থাকলেও তার মেয়েকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি । এই মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটেছে আজ মঙ্গলবার মঙ্গলকোট থানার ষাঁড়ি গ্রামে । মৃত শিশুর নাম ঈশিকা সর্দার । শিশুর মা সান্ত্বনা সর্দার বর্তমানে বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন । জানা গেছে, ঈশিকা ছিল বধূর দ্বিতীয় সন্তান । তাদের প্রথম সন্তান বছর চারেক আগে শ্বাসনালীতে খাবার আটকে মারা যায় ৷ মর্মান্তিক এই ঘটনায় শোকে বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছে গোটা পরিবার । শোকের ছায়া গোটা গ্রাম জুড়ে ।
জানা গেছে,ষাঁড়ি গ্রামের সর্দার পাড়ার বাড়ি সান্ত্বনা সর্দারদের । বাড়িতে রয়েছেন সান্ত্বনাদেবীর স্বামী বিষ্ণু সর্দার,শ্বশুর বাপি, শাশুড়ী ফুলকলিদেবী ও নবম শ্রেণীর ছাত্র দেবর তারক সর্দার । বিষ্ণুর দুই বোনের বিয়ে হয়ে গিয়েছে । সান্ত্বনা সর্দার ও তার নাবালক দেবর ছাড়া পরিবারের বাকি সদস্যরা জনমজুরির কাজ করেন । আজ সকালেই বোরোচাষের কাজে মাঠে চলে যান তারা । তারক বন্ধুদের সাথে খেলতে চলে যায় । বাড়িতে শিশুকন্যাকে নিয়ে ছিলেন সান্ত্বনা সর্দার । ঘরের সামনে বারান্দার একপাশে উনানে শুকনো ডালপালার জ্বালানিতে রান্না করছিলেন তিনি । কোলে ছিল শিশুকন্যা । সেই সময় অসাবধানতাবশত সান্ত্বনাদেবীর কাপড়ে আগুন ধরে যায় । নিমেষের মধ্যে গোটা শরীরে আগুন ছড়িয়ে যায় । মেয়েকে কোলে নিয়েই গুরুতর অগ্নিদগ্ধ হয়ে পড়ে যান বধূ । টুলু সর্দার নামে বধূর গোঙানির আওয়াজ পেয়ে ছুটে আসেন । মা ও মেয়ের বীভৎস দগ্ধ চেহেরা দেখে তিনি চিৎকার করে লোকজন ডাকাডাকি করেন ।
এরপর পরিবারের সদস্যরা ও প্রতিবেশীরা দুজনকে উদ্ধার করে প্রথমে মঙ্গলকোটের সিঙ্গত হাসপাতালে নিয়ে যায় । সেখানে শিশুটিকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা । মায়ের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয় । তার অবস্থা আশঙ্কাজনক ।।