দিব্যেন্দু রায়,কেতুগ্রাম(পূর্ব বর্ধমান),১৮ আগস্ট : গরু পাচার মামলায় বীরভূম জেলার তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের গ্রেফতার করেছে সিবিআই । বর্তমানে তিনি জেল হেফাজতে । এরই মাঝে ফের একবার গরু পাচারে নাম জড়ালো বীরভূম জেলার । বৃহস্পতিবার ভোরে ৪৭ টি গরুসহ ৯ জন গরু পাচারকারীকে গ্রেফতার করেছে পূর্ব বর্ধমান জেলার কেতুগ্রাম থানার পুলিশ । আটক করা হয়েছে দুটি মিনি ট্রাক, বেশকয়েকটি মোবাইল ফোন । পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতরা প্রত্যেকেই বীরভূম জেলার বাসিন্দা । তার মধ্যে রয়েছে বীরভূম জেলার নানুর থানা এলাকার মনোহারা শেখ, সেলিম শেখ সুকুমার মণ্ডল, মোরু শেখ এবং শেখ রাজেশ । বাকি চারজন নূর আলম শেখ, মির সাকের আলি, কেবির আলি শেখ, এবং পলাশ শেখের বাড়ি বীরভূম জেলার লাভপুর থানা এলাকায় ।
জানা গেছে,এদিন ভোরে দুটি মিনি ট্রাকে বেশ কিছু গরু চাপিয়ে ফুটিসাঁকো থেকে পাঁচুন্দির দিকে আসছিল । পাশাপাশি কাটোয়া বোলপুর রোড ধরে বেশ কিছু গরু ডাকিয়ে নিয়ে আসছিল আরও একটি দল । সেই সময় কেতুগ্রাম থানার পুলিশের টহলদারি ভ্যানের নজরে পড়ে যায় । পুলিশ কাগজপত্র দেখতে চাইলে পাচারকারীরা কোনো বৈধ কাগজপত্র দেখাতে পারেনি । এরপরেই ৯ জন পাচারকারীকে গ্রেফতার করে পুলিশ । আটক করা হয় ৪৭ টি গরু, দুটি মিনি ট্রাক । যদিও ধৃতদের দাবি,তারা গরুগুলি কেতুগ্রামের পাঁচুন্দি হাটে বিক্রির জন্য নিয়ে যাচ্ছিল।
প্রসঙ্গত,গরু পাচার মামলায় অনুব্রত মণ্ডল গ্রেফতার হওয়ার আগে থেকে এর গোটা নেটওয়ার্কের সন্ধান চালাতে শুরু করে দিয়েছিল সেন্ট্রাল ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশন বা কেন্দ্রীয় অনুসন্ধান সংস্থা (সিবিআই) । তদন্তে সিবিআই জানতে পারে এরাজ্য থেকে গরু পাচারে মূলত দুটি করিডোর রয়েছে । একটি হল বীরভূমের ইলামবাজার হয়ে প্রথমে মুর্শিদাবাদ । তারপর মূর্শিদাবাদের বড়ঞা, সালার, সাগরদিঘি হয়ে বাংলাদেশে । দ্বিতীয়টি হল কাটোয়া থেকে নদীয়া হয়ে বাংলাদেশ । পাইকেররা কাটোয়ায় গরুর পাল নৌকায় চাপিয়ে প্রথমে নিয়ে যেত নদীয়ায় । তারপর নদীয়া থেকে সীমান্ত পেরিয়ে পাচার হত বাংলাদেশে । আর মূলত মঙ্গলকোটের কৈচর, কেতুগ্রামের পাচুন্দি, রায়না থানার সেহেরা,গলসির খেতুড়া ও গুসকরায় গবাদিপশুর হাটগুলি গরুর সরবরাহ থেকে হত বলে তদন্তে জানতে পেরেছে সিবিআই । এখন বীরভূমের ওই ৯ পাচারকারী কোথায় গরুগুলি পাচার করার জন্য নিয়ে যাচ্ছিল তা তদন্ত করে দেখছে পুলিশ । এইদিনই ধৃতদের কাটোয়া মহকুমা আদালতে তোলা হয় । তবে তাদের প্রত্যেকেরই জামিন মঞ্জুর করেন বিচারক ।।