দিব্যেন্দু রায়,কাটোয়া(পূর্ব বর্ধমান),১৪ মে : পূর্ব বর্ধমান জেলার কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে বড়সড় অনিয়ম ধরা পড়ল । বিরিয়ানি খাওয়া,গাড়ি ভাড়া,গাছ লাগানোসহ ৮১ টি বিলে অসঙ্গতি ধরা পড়েছে । সব মিলে এক কোটি টাকার অধিক ওই বিলগুলি ভূয়ো নথি দেখিয়ে জমা করা হয়েছিল বলে প্রাথমিক তদন্তে জানতে পেরেছে স্বাস্থ্য দপ্তর । ওই সমস্ত ভূয়ো বিল যে ইজারাদার জমা করেছেন তার বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের হতে পারে বলে সুত্রের খবর । এদিকে এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই শোড়গোল পড়ে গেছে রাজ্য জুড়ে । কাটোয়া হাসপাতালের রোগী কল্যান সমিতির অন্যতম সদস্য তথা কাটোয়ার বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘ভুয়ো নথি দিয়ে কোটি টাকার বিল তুলে নেওয়ার চেষ্টা চলছিল । আমরা যাচাই কমিটির রিপোর্টে সব জানতে পেরেছি । ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ জানানো হবে ।’
জানা গেছে,যেসমস্ত বিলগুলি নিয়ে বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে সেই সময় কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালের সুপার ছিলেন ডাঃ রতন সাশমল। তিনি ২০১৫ এপ্রিল মাসে কাটোয়া হাসপাতালের সুপার পদে যোগ দিয়েছিলেন । ২০২০ সালে সেপ্টেম্বর মাসে বদলি হন । তাঁর কার্যকালে দাখিল করা বিতর্কিত বিলগুলির মধ্যে রয়েছে হাসপাতালের স্টাফেদের বিরিয়ানি খাওয়া, গাড়ি বাড়া,সবুজায়নের জন্য বৃক্ষচারা কেনা, আসবাবপত্র কেনা, ওষুধ ও ইলেকট্রনিক্স যন্ত্রপাতির কেনা প্রভৃতি । ২০১৯ -২০২০ আর্থিক বছরের শেষ দিক ওই বিল জমা করেছিলেন কিংশুক মণ্ডল নামে এক ইজারাদার । যদিও বিলগুলির নথিপত্রের অসঙ্গতি দেখে পেমেন্ট আটকে দেয় স্বাস্থ্য দপ্তর । এযাবৎ ওই ৮২ টি বিল মিলে এক কোটি টাকার উপর পেমেন্ট পেন্ডিং আছে ।
জানা গেছে,২০২১ সালের নভেম্বর মাসে তৎকালীন সুপারের নেতৃত্ব রোগী কল্যান সমিতির বৈঠকে যাচাই কমিটি গঠন করা হয় বিলগুলি পরীক্ষার জন্য । আর তখনই ৩ ঠিকাদারের বকেয়া বিলের নথিপত্রে অসঙ্গতি ধরা পড়ে । বর্তমানে ঘটনার তদন্ত করছেন
পূর্ব বর্ধমান জেলা উপ স্বাস্থ্য আধিকারিক(২) সূবর্ণ গোস্বামী । তিনি বলেন,’কাটোয়া হাসপাতালে বিল সংক্রান্ত অভিযোগের সত্যতার প্রমাণ পাওয়া গেছে । যদিও ওই বিলগুলির এখনও টাকা মেটানো হয়নি । তদন্ত প্রক্রিয়া শেষ হলে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে বিস্তারিত রিপোর্ট পাঠিয়ে দেওয়া হবে ।’
অন্যদিকে অভিযুক্ত ঠিকাদারদের মধ্যে কিংশুক মণ্ডল এনিয়ে মুখ না খুললেও হাসপাতালে বিরিয়ানি সরবরাহকারী ঠিকাদার পুষ্পেন্দু মাঝি বলেন, ‘বিল ভূয়ো হলে তখন কাটোয়া হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কেন “ওয়ার্ক ডান” বলে ছাড়পত্র দিয়েছিল ?’