এইদিন ওয়েবডেস্ক,মালদা,২২ ডিসেম্বর : অপহরণের ৪ ঘন্টার মধ্যেই এক ব্যবসায়ীর ৭ বছরের মেয়েকে রায়গঞ্জ থেকে উদ্ধার করল মালদা জেলা পুলিশ । গ্রেফতার করা হয়েছে দুই অপহরণকারীও । পুলিশ জানিয়েছে,ধৃতদের নাম আবদুস সালামের ছেলে ইজাজ আহমেদ এবং মুস্তাফার ছেলে মনসুর আলম ওরফে রাজু । তাদের বাড়ি মালদা জেলার হরিশচন্দ্রপুর থানার গঙ্গনদিয়া গ্রামে । আটক করা হয়েছে ধৃতদের বাজাজ পালসার কালো রঙের বাইকটিও । আজ রবিবার ধৃতদের আদালতে তোলা হয়৷
মালদা জেলা পুলিশ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম অ্যাকাউন্টে জানিয়েছে, শনিবার সকাল ১১ :৪০ নাগাদ ৭ বছরের ওই শিশুকন্যাকে অপহরণের খবর আসে । এক স্থানীয় ব্যবসায়ীর বাড়ির সামনে খেলছিল শিশুটি । হঠাৎই একটি নম্বরপ্লেট বিহীন বাইকে করে দুই হেলমেট-পরিহিত দুষ্কৃতী এসে মেয়েটিকে তুলে নিয়ে দ্রুতগতিতে পালিয়ে যায় । পুলিশ পরিবারের কাছ থেকে মেয়েটির ছবি নেয় এবং অপহরণের সময় কি পোশাক পরেছিল জেনে নেয় । সিসিটিভি ফুটেজেও অপহরণকারীদের পালিয়ে যাওয়ার দৃশ্য ধরা পড়ে বলে জানিয়েছে পুলিশ ।
পুলিশ জানিয়েছে,এলাকাটি বিহার সীমান্তের নিকটবর্তী। মালদা পুলিশের তরফে বিহার যাওয়ার সমস্ত রাস্তায় সঙ্গে সঙ্গে নাকাবন্দি করা হয়। যাবতীয় তথ্যসহ অপহরণের বিষয়টি জানিয়ে দেওয়া হয় উত্তরবঙ্গের পার্শ্ববর্তী জেলাগুলিকে, বিশেষত ইসলামপুর এবং রায়গঞ্জকে। সেখানেও শুরু হয় নাকা চেকিং। দুপুরের দিকে অপহরণকারীদের তরফে মেয়েটির বাবার কাছে ফোন আসে, ‘পুলিশে কিছু জানালে মেয়েকে আর ফিরে পাবেন না।’ সেই ফোনের লোকেশন ট্র্যাক করা হয় । পদস্থ অফিসারদের তত্ত্বাবধানে চলতে থাকে নাকা চেকিং, রাস্তায় নামেন মালদা, ইসলামপুর এবং রায়গঞ্জ জেলার প্রতিটি থানার অফিসাররা । এরপর শনিবার বিকেল ৪:১০ নাগাদ উত্তর দিনাজপুর জেলার করণদিঘি থানার টুঙ্গিডিঘি এলাকায় একটি টোল বুথের কাছে নাকা চেকিং-এ হাতেনাতে ধরা পড়ে যায় দুই অপহরণকারী। উদ্ধার করা হয় নাবালিকাকে। শিশুটি সুস্থ আছে বলে জানিয়েছে পুলিশ ।
পুলিশ জানিয়েছে,ধৃত দুই দুষ্কৃতী ইজাজ আহমেদ ও মনসুর আলমের কাছে একটি ব্যাগ ছিল। যা থেকে পাওয়া গেছে একটি আগ্নেয়াস্ত্র, কিছু তাজা কার্তুজ। মেয়েটিকে নিয়ে তারা ইটাহার, করণদীঘি, ডালখোলা হয়ে বিহারে পালিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল । তারপর মেয়েটির বাবার থেকে মোটা টাকা মুক্তিপণ আদায়ের ছক কষেছিল । কিন্তু মালদা এবং রায়গঞ্জ পুলিশের তৎপরতায় তাদের সেই পরিকল্পনা ভেস্তে যায়। জেলা পুলিশ বলেছে, রাজ্যের সীমান্তে কড়া নজরদারি অব্যাহত রয়েছে সর্বত্র। ভিনরাজ্য থেকে এসে অপরাধ করে যাওয়া, বা এ রাজ্যে অপরাধ করে পার্শ্ববর্তী রাজ্যে পালিয়ে যাওয়া, কোনওটাই হতে দেব না আমরা।।