প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়,বর্ধমান,১৩ জুন : গ্রীষ্মের দাবদাহ থেকে বাঁচতে সবাই চাইছেন বৃষ্টি। অথচ আকাশে কালো মেঘ দেখা দিলেই বাড়ছে আতঙ্ক।কারণ মুহুর্মুহু বজ্রপাত।যে বজ্রপাতে গত দু,দিনে ৭ জনের মৃত্যু হয়েছে পূর্ব বর্ধমান জেলায় । মৃতদের পরিবারে এখন শুধুই ভাসছে কান্নার রোল । প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে,মৃতরা হলেন বিজয় ঘোষ (৫৫), অজিত ঘোষ(৫৯),জিল্লাল মোল্লা(৬২), রুবিনা বিবি (৩৭),ষষ্ঠী সিং (৪৭), নিখিল ঘোষ (৬১) এবং শেখ আবুল হায়াত (১৪)।
সোমবার বিকালে মঙ্গলকোটের কানাইডাঙ্গা গ্রামের কাছে মৃত্যু হয় দুই ভাই বিজয় ঘোষ এবং অজিত ঘোষের।একই সময়ে মঙ্গলকোটের ঠ্যাঙ্গাপাড়া ও সাকোনা গ্রামে বজ্রপাতে মৃত্যু হয় জিল্লাল মোল্লার এবং রুবিনা বিবির।বীরভূমের নানুরের বাসিন্দা রুবিনা বিবি সাকোনা গ্রামে আত্মীয়ের বাড়িতে এসেছিলেন। আত্মীয়র বাড়ির কাছে মাঠে যাওয়ার সময় বজ্রপাতে তাঁর মৃত্যু হয়।এমনকি এদিনের বজ্রপাতে মঙ্গলকোটে তিনটি গরুও মারা গিয়েছে বলে জানা গিয়েছে।এই চারজন ছাড়াও সোমবার সন্ধ্যায় বজ্রপাতে মৃত্যু হয় জেলার নাদনঘাট থানার গাগড়া গ্রাম নিবাসী মৎস্যজীবী ষষ্ঠী সিংয়ের । নদীতে জাল ফেলতে গিয়ে বজ্রপাতে তার মৃত্যু হয় বলে পরিবার সদস্যরা জানিয়েছেন।এর পর ২৪ ঘন্টা কাটতে না কাটতে মঙ্গলবার বিকালে মাঠে গরু চরাতে গিয়ে বজ্রপাতে মৃত্যু হয় নিখিল ঘোষের । তাঁর বাড়ি মন্তেশ্বরের দেনুড় পঞ্চায়েতের ধেনুয়া গ্রামে। একই দিনে একই সময়ে মাঠে বাঁধা থাকা গরু মাঠ থেকে বাড়িতে আনতে গিয়ে বজ্রপাতে মৃত্যু হয় চোদ্দ বছর বয়সী শেখ আবুল হায়াতের ।
বজ্রপাতে দু’দিনে সাত জনের মৃত্যু জেলার বাসিন্দা মহলেও যথেষ্ট আতঙ্ক বাড়িয়ে দিয়েছে। তাই গ্রীষ্মের দহন থেকে মুক্তি পেতে জেলার মানুষ বৃষ্টির মুখাপেক্ষী হয়ে থাকলেও আকাশে কালো মেঘ দেখলেই তাঁরা আঁতকে উঠছেন । কি ভাবে এর থেকে পরিত্রাণ পাওয়া যাবে তাও বুঝে উঠতে পারছে না বাসিন্দারা।সবাই এখন হাঁতরে বেড়াচ্ছেন বজ্রপাত থেকে বাঁচার পথ । এ নিয়ে পরিবেশবিদ ও আবহাওয়াবিদদের ব্যাখ্যা, দূষণ
বজ্রপাতের অন্যতম কারণ।এ ছাড়াও রয়েছে গাছ কেটে বহুতল নির্মাণ,গাড়ির ধোঁয়া, কলকারখানার ধোঁয়া। যা অত্যধিক মাত্রায় পরিবেশকে দূষিত করছে। অথচ সেই তুলনায় গাছ লাগানো হচ্ছে না। যার ফলে মাত্রাতিরিক্ত দূষণ বাতাসে গরম ধূলিকণা বাড়ছে, যা বজ্রপাতের অনুকূল পরিবেশ তৈরি করছে।।