এইদিন ওয়েবডেস্ক,বাংলাদেশ,১৮ সেপ্টেম্বর : জিন-পরির মাধ্যমে বিভিন্ন সমস্যা সমাধানের কথা বলে সোশ্যাল মিডিয়ায় বিজ্ঞাপন দিয়েছিলেন বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার মোহম্মদ তানজিল আহমেদ ওরফে তানজিদ হাসান নামে এক স্বঘোষিত দরবেশ । বিজ্ঞাপনে তিনি দাবি করেন যে তিনি সৌদি আরবের মসজিদে নববির ইমাম এবং তিনি কোরান–হাদিসের আলোকে মানুষের সমস্যা সমাধানে কাজ করেন । এই বিজ্ঞাপন দেখে নিজের পারিবারিক সমস্যা সমাধানে ওই দরবেশের কাছে ছুটেছিলেন ঢাকার বাসিন্দা অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা আনোয়ারা বেগম । আর তার সমস্যা সমাধানের নামে কয়েক ধাপে ৭ কোটি টাকা প্রতারণার অভিযোগ উঠেছে মোহম্মদ তানজিল আহমেদের বিরুদ্ধে । প্রতারিত হয়েছেন বুঝতে পেরে ওই মহিলা ঢাকার মোহাম্মদপুর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন তিনি। পরে মামলার তদন্তভার যায় পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) এর হাতে । শেষে কথিত ওই দরবেশকে গ্রেপ্তার করে সিআইডি ।
পুলিশ জানিয়েছে,আনোয়ারা বেগম সরকারি কর্মকর্তা ছিলেন। তাঁর তিন ছেলেমেয়ে দেশের বাইরে থাকেন। স্বামী দেশের একজন নামকরা চিকিৎসক । দিনের অধিকাংশ সময় তিনি ফেসবুকে সময় কাটাতেন । সাম্প্রতিক কিছু সময় ধরে তার কিছু পারিবারিক সমস্যা চলছিল । সেই সমস্যা সমাধানে তিনি মরিয়া হয়ে ওঠেন । আর তখনই ফেসবুকে মোহম্মদ তানজিল আহমেদের বিজ্ঞাপন নজরে পড়ে । শেষে মোহম্মদ তানজিলের ফাঁদে পড়ে যান তিনি ।
জানা গেছে,বিষয়টি নিয়ে আনোয়ারা বেগম তার বাড়ির গৃহপরিচারিকার সঙ্গে আলোচনা করেন।গৃহপরিচারিকা তাঁকে জানান, জিন-পরির মাধ্যমে দরবেশ এসব সমস্যার সমাধান করেন। তাঁর গ্রামের কয়েকজনের এভাবে সমস্যার সমাধান হয়েছে। এটা শুনে বিজ্ঞাপনে দেওয়া মোবাইল নম্বরে ফোন করেন আনোয়ারা। অপর প্রান্তে কথিত দরবেশ খুব সুন্দর করে কথা বলে তাঁর পারিবারিক সমস্যা শুনতে চান। পরে দরবেশ তাকে অনলাইনে টাকা পাঠাতে বলেন । কথামতো আনোয়ারা বেগম ওই নম্বরে টাকা পাঠান ।
রবিবার এক সাংবাদিক সম্মেলনে সিআইডি জানিয়েছে,প্রথমে অল্প পরিমান করে কয়েক ধাপে প্রতারক দরবেশের অ্যাকাউন্টে ঠাকা পাঠিয়েছিলেন ওই মহিলা । বড় অঙ্কের টাকা নেওয়ার সময় মোহম্মদ হাসেম নামে তার এক সঙ্গীকে আনোয়ারা বেগমের কাছে পাঠাতেন । এভাবে ধাপে ধাপে প্রায় ৭ কোটি টাকা আত্মসাৎ করে দরবেশ রূপী মোহম্মদ তানজিল আহমেদ ওরফে তানজিদ হাসান । পরে মহিলা প্রতারিত হয়েছেন বুঝতে পেরে পুলিশের দ্বারস্থ হলে ওই প্রতারককে ঢাকার উত্তরা এলাকায় অভিযান চালিয়ে গ্রেফতার করা হয় । তবে সিআইডি জানিয়েছে, এই চক্রের হোতা মোহম্মদ হাসেম । সে পলাতক । তার সন্ধান চলছে ৷।