এইদিন ওয়েবডেস্ক,সিডন,৩১ জুলাই : লেবাননের দক্ষিণাঞ্চলীয় বন্দর শহর সিডনের কাছে বৃহত্তম ফিলিস্তিনি শরণার্থী শিবিরে দুই সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর সংঘর্ষে অন্তত ৬ জন নিহত হয়েছে । ফিলিস্তিনি গোষ্ঠী ‘ফাতাহ’ রবিবার এক বিবৃতিতে তাদের কমান্ডার আশরাফ আল-আরমাউচি এবং তার চারজন সঙ্গীর মৃত্যু নিশ্চিত করেছে । আল-শাবাব আল-মুসলিম গ্রুপের একজন সন্ত্রাসীও নিহত হয়েছে । আহত হয়েছে আরও অন্তত ৭ জন । আহতদের মধ্যে দুই শিশুও রয়েছে ।
লেবাননের সেনাবাহিনী এক বিবৃতিতে বলেছে যে একটি মর্টার শেল ক্যাম্পের বাইরে একটি সামরিক ব্যারাকে আঘাত করে এবং একজন সৈন্য আহত হয়েছে । জানা গেছে,অজ্ঞাত বন্দুকধারীরা সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর সদস্য মাহমুদ খলিলকে হত্যার চেষ্টা করে, তারা খলিলকে না পেয়ে পরিবর্তে তার একজন সঙ্গীকে হত্যা করে । পরে এইন এল-হিলওয়েহ ক্যাম্পে তুমুল লড়াই শুরু হয় । লড়াইয়ে গ্রেনেড ও অ্যাসল্ট রাইফেল ব্যবহার করা হয়েছিল ।
এইন এল-হিলওয়েহ (Ein el-Hilweh) শরনার্থী শিবিরটি ইসরায়েলি বাহিনীর দ্বারা বাস্তুচ্যুত হওয়া ফিলিস্তিনিদের থাকার জন্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল ১৯৪৮ সালে । জাতিসংঘের মতে প্রায় ৫৫,০০০ মানুষ রয়েছে এই শরনার্থী শিবিরে । শরনার্থী শিবিরটি সন্ত্রাসবাদী কর্মকাণ্ডের জন্য কুখ্যাত ।
জানা যায়, রবিবার দু’দল অ্যাসল্ট রাইফেল এবং রকেট চালিত গ্রেনেড লঞ্চার নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে এবং ক্যাম্পে হ্যান্ড গ্রেনেড ছোড়ে । সকালে বেশ কয়েক ঘন্টা ধরে যুদ্ধ বন্ধ ছিল, যদিও রাষ্ট্রীয় মিডিয়া বলেছে যে এখনও বিক্ষিপ্ত স্নাইপার ফায়ার চলছে । কিন্তু ফিলিস্তিনি জেনারেল ও তার সঙ্গীদের হত্যার পর আবারও যুদ্ধ শুরু হয় । লক্ষ্যভ্রষ্ট বুলেটের আঘাতে ভবনগুলির জানলা দোকানের সামনের কাঁচ ভেঙে যায় । ক্যাম্পের কাছাকাছি সিডন এলাকার কিছু বাসিন্দা তাদের বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়ে যায়। পাবলিক সিডন জেনারেল হাসপাতাল তার কর্মচারী ও রোগীদের সরিয়ে নিয়েছে । ইউএনআরডব্লিউএ জানিয়েছে যে তাদের দুটি স্কুল যেগুলিতে প্রায় ২,০০০ পড়ুয়া পড়াশোনা করে, যুদ্ধে স্কুল দুটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে । যুদ্ধের কারনে অনির্দিষ্টকালের জন্য কাজকর্ম বন্ধ রাখার কথা ঘোষণা করেছে ইউএনআরডব্লিউএ ।
প্রসঙ্গত,এইন এল-হিলওয়েহ (Ein el-Hilweh) শরনার্থী শিবিরে বছরের পর বছর ধরে সশস্ত্র ফিলিস্তিনি উপদলগুলোর সংঘর্ষে লিপ্ত রয়েছে । ক্যাম্পের জনবসতি এলাকার আশেপাশে আশ্রয়ের জন্য আসা লোকজনের উপর দমন-পীড়ন চালিয়ে আসছে সশস্ত্র জঙ্গি গোষ্ঠীগুলি । লেবাননের সেনাবাহিনী দেশের ফিলিস্তিনি শরণার্থী শিবিরে প্রবেশ করে না, বরঞ্চ শিবিরের নিরাপত্তার দায়িত্ব ওই দলগুলির উপর ছেড়ে দেয় । যেকারনে সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলির মধ্যে আকছার লড়াই হয় । ২০১৭ সালে ফিলিস্তিনি দলগুলো আইএসআইএস (আইএসআইএল) এর সাথে যুক্ত একটি সশস্ত্র গোষ্ঠীর সাথে প্রায় এক সপ্তাহের ভয়াবহ সংঘর্ষে লিপ্ত হয়েছিল । লেবানন জুড়ে সাড়ে চার লাখের বেশি ফিলিস্তিনির উপস্থিতি জাতিসংঘের ত্রাণ ও কর্ম সংস্থা (UNRWA)-তে নিবন্ধিত রয়েছে ।।