এইদিন ওয়েবডেস্ক, বাহরাইচ(ইউপি), ২৬ সেপ্টেম্বর : বুধবার বাহরাইচের পয়াগপুর থানা এলাকার পেহলওয়ারার পাতিহাট মোড়ে অবস্থিত একটি অবৈধ মাদ্রাসায় অভিযান চালায় প্রশাসন । দোকানের আড়ালে চলছিল ওই অবৈধ মাদ্রাসা । উপ-জেলা ম্যাজিস্ট্রেট অশ্বানী পান্ডে মাদ্রাসার শৌচাগারে তল্লাশি চালিয়ে ভেতরে ৪০ জন নাবালিকা ছাত্রীকে দেখতে পান। তাদের সকলের বয়স ৯ থেকে ১৪ বছরের মধ্যে । মাদ্রাসা পরিচালক মহম্মদ খলিল আহমেদ প্রথমে কর্মকর্তাদের ভিতরে ঢুকতে বাধা দেয়, কিন্তু উপ-জেলা ম্যাজিস্ট্রেট কঠোরতা দেখালে সে নতি স্বীকার করতে বাধ্য হয় । তল্লাশির সময় বেশ কয়েকজন ছাত্রীকে শৌচাগারে তালাবদ্ধ অবস্থায় পাওয়া যায়। কর্মকর্তারা বলছেন, মাদ্রাসার পরিচালক খলিল আহমেদ মেয়েদের লুকানোর চেষ্টা করেছিলেন। জানা গেছে,সামনে একটি দোকান ছিল এবং পিছনে গোপনে মাদ্রাসাটি চালানো হচ্ছিল । মওলানা উত্তর প্রদেশের বিভিন্ন জেলা থেকে অল্প বয়সী মেয়েদের এনে সেখানে রাখা রেখেছিল। মাস্টারমাইন্ড মহম্মদ খলিল আহমেদ কোটি কোটি টাকার সম্পত্তির মালিক বলে জানা গেছে ।
বৃহস্পতিবার কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, পরিদর্শনের সময় ৯ থেকে ১৪ বছর বয়সী চল্লিশজন মেয়েকে একটি অনিবন্ধিত মাদ্রাসার শৌচাগারের ভেতরে আটকে রাখা অবস্থায় পাওয়া গেছে। পয়গপুরের সাব-ডিভিশনাল ম্যাজিস্ট্রেট (এসডিএম) অশ্বিনী কুমার পান্ডে পিটিআইকে বলেন, পয়গপুর তহসিলের অন্তর্গত পাহালওয়ারা গ্রামে তিন তলা ভবনের ভেতরে একটি অবৈধ মাদ্রাসার কার্যক্রম সম্পর্কে জেলা প্রশাসন বারবার অভিযোগ পেয়েছে।তিনি বলেন,’বুধবার, যখন আমরা পরিদর্শনের জন্য ভবনে যাই, তখন মাদ্রাসা পরিচালকরা প্রথমে আমাদের উপরে যেতে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করে। পুলিশের উপস্থিতিতে, আমরা প্রাঙ্গণে প্রবেশ করি এবং বারান্দার শৌচাগারটি তালাবদ্ধ দেখতে পাই ।মেয়েরা ভীত দেখাচ্ছিল এবং স্পষ্টভাবে কিছু বলতে পারছিল না ।’
এসডিএম বলেন, জেলা সংখ্যালঘু কল্যাণ কর্মকর্তা মহম্মদ খালিদকে প্রতিষ্ঠানের নিবন্ধন এবং বৈধতা যাচাই করতে বলা হয়েছে। খালিদের মতে, স্থানীয়রা জানিয়েছেন যে মাদ্রাসাটি প্রায় তিন বছর ধরে নিবন্ধন ছাড়াই পরিচালিত হচ্ছিল।তিনি বলেন,
‘ব্যবস্থাপনা এবং কর্মীরা নিবন্ধন বা বৈধতা সম্পর্কিত কোনও নথি উপস্থাপন করতে পারেনি। ২০২৩ সালের জরিপের সময়, বাহরাইচে ৪৯৫টি অনিবন্ধিত মাদ্রাসা চিহ্নিত করা হয়েছিল এবং মনে হচ্ছে এটি তখন জরিপ দলের নজরে পড়েনি ।’
রাজ্য সরকার এখনও পর্যন্ত এই ধরনের অবৈধ মাদ্রাসা সম্পর্কে কোনও স্পষ্ট নীতি জারি করেনি। যদিও গত বছর কিছু মাদ্রাসা সিল করে দেওয়া হয়েছিল, তাদের পরিচালকরা হাইকোর্ট থেকে স্থগিতাদেশ পেয়েছিলেন, খালিদ বলেন, শীঘ্রই সরকারের কাছ থেকে একটি নতুন নিয়ন্ত্রক কাঠামো আশা করা হচ্ছে।তিনি আরও বলেন,’আমরা জিজ্ঞাসা করি যে মাদ্রাসায় আটটি কক্ষ থাকা সত্ত্বেও মেয়েরা কেন টয়লেটের ভিতরে লুকিয়ে ছিল, যার উত্তরে তাকসীম ফাতিমা নামে একজন শিক্ষিকা বলেন যে মেয়েরা হট্টগোলে আতঙ্কিত হয়ে নিজেদের ভিতরে আটকে রেখেছিল ।’ তিনি বলেন, মাদ্রাসার রেকর্ড পরীক্ষা করা হচ্ছে এবং এটি বন্ধ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। খালিদ বলেন,’মেয়েদের নিরাপদে তাদের বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়ার জন্য কর্তৃপক্ষকে বলা হয়েছে এবং মনে হচ্ছে সবাই এখন বাড়িতে ফিরে এসেছে।’
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (শহর) রামানন্দ প্রসাদ কুশওয়াহা বলেন,’এখনও পর্যন্ত কোনও এফআইআর দায়ের করা হয়নি। মা-বাবা, এসডিএম, অথবা সংখ্যালঘু কল্যাণ কর্মকর্তা এখনও পর্যন্ত মামলা দায়েরের জন্য আমাদের সাথে যোগাযোগ করেননি। যদি কোনও অভিযোগ পাওয়া যায়, তাহলে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে ।’।