এইদিন ওয়েবডেস্ক,ফারাক্কা(মূর্শিদাবাদ),১৮ জানুয়ারী : অনলাইন গেম খেলা নিয়ে ঝামেলার জেরে এক বন্ধুকে খুন করেছিল চার কিশোর । তবে এখানেই শেষ নয়,ঘাতকরা পেশাদার খুনিদের কায়দায় প্রমান লোপাটের জন্য মৃত কিশোরের শরীরে হাতের আঙুলের ছাপ পড়া অংশ পেট্রোল ঢেলে পুড়িয়ে পর্যন্ত দিয়েছিল তারা । কিন্তু এসব করেও তারা পুলিশের চোখকে ফাঁকি দিতে পারেনি । চার ঘাতক কিশোরকে শেষ পর্যন্ত গ্রেফতার করেছে পুলিশ । চাঞ্চল্যকর এই খুনের ঘটনা ঘটেছে মুর্শিদাবাদ জেলার ফরাক্কায় ।
জানা গেছে,মৃত কিশোরের নাম পাপাই দাস (পাপ্পু)। গত ৮ তারিখ সন্ধ্যায় সে বাড়ি থেকে বের হয়েছিল । তারপর সে আর বাড়ি ফেরেনি । এদিকে ছেলেকে খুঁজে না পেয়ে থানায় একটি নিখোঁজ ডাইরি করেন পাপাইয়ের বাবা অনিল দাস । কিন্তু সোমবার সন্ধ্যা নাগাদ ঘোড়াইপাড়া এবং নিশিন্দ্রা নৌকা ঘাটের মাঝে আট নম্বর ব্লকের ফিডার ক্যানেলের ধারে পাপাইয়ের ক্ষতবিক্ষত পচাগলা দেহ উদ্ধার করে ফারাক্কা থানার পুলিশ ।
জানা গেছে,কিশোরের দেহ উদ্ধারের পর ঘাতকদের সন্ধানে নেমে পড়ে পুলিশ । পুলিশের প্রথমেই সন্দেহ গিয়ে পড়ে মৃত কিশোরের চার বন্ধুর উপর । পুলিশ তাদের আটক করে জেরা করে । প্রথমে তারা খুনের কথা কবুল না করলেও শেষে পুলিশের ম্যারাথন জেরায় তারা ভেঙে পড়ে । জানা গেছে,পুলিশের জেরায় ঘাতক কিশোররা জানায় যে তাদের মধ্যে একজন পাপাইয়ের মাথায় লাঠি দিয়ে সজোরে আঘাত করে । পাপাই রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে লুটিয়ে পড়ে । এরপর হামলাকারী কিশোর তার বাকি তিন বন্ধুকে ফোন করে ঘটনাস্থলে ডেকে আনে । ওই তিনজন এলে তারা মিলে একটি দড়ি দিয়ে পাপাইকে শ্বাসরোধ করে মেরে ফেলে । এরপর প্রমাণ লোপাটের জন্য তারা পাপাইয়ের শরীরের যে যে জায়গায় তাদের হাতের ছাপ পড়েছিল সেই জায়গাগুলো পেট্রোল ঢেলে পুড়িয়ে দেয় । পরে দেহটি ফিডার ক্যানেলের ধারে ফেলে দিয়ে পালিয়ে যায় ।
কিন্তু কেন খুন?
জানা গেছে,পুলিশ ধৃতদের জেরা করে জানতে পেরেছে যে পাপাই তাএ চার বন্ধুর সাথে খোঁজ নিয়মিত মোবাইল ফোনে অনলাইন গেম খেলত । আর গেম খেলার জন্য সংশ্লিষ্ট অ্যাপ কর্তৃপক্ষকে নির্দিষ্ট অর্থ মেটাতে হয় । কর্তৃপক্ষের কাছে সেই অনুমোদন নিতে সম্প্রতি পাপাই তার এক বন্ধুর কাছ থেকে ২০০০ টাকা ধার করেছিল । কিন্তু পাপাইয়ের ওই আইডি গত ৭ জানুয়ারী হ্যাক করে নেয় ধৃত চারজনের মধ্যে একজন । এনিয়ে তাদের মধ্যে ঝামেলা চলছিল । সেই ঝামেলা মেটানোর জন্য গত
গত ৮ তারিখ সন্ধ্যায় পাপাইয়ের তার এক বন্ধু ফোন করে ডাকে । পাপাই সেখানে যেতেই বন্ধুরা তাকে পরিকল্পিতভাবে খুন করে বলে অভিযোগ ।
মৃত কিশোরের বাবা অনিল দাসের নির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে একটি খুনের মামলা রুজু করেছে পুলিশ । গ্রেফতারির পর চার ঘাতক কিশোরকে বুধবার বিকেলে অকুস্থলে নিয়ে গিয়ে ঘটনার পুনঃনির্মাণ করে পুলিশ ।।