প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়,বর্ধমান,০৫ ডিসেম্বর : গলায় ফাঁস দিয়ে শ্বাসরোধ করে এই রাজ্যের এক অটো চালক যুবককে খুনের অভিযোগে গ্রেপ্তার হল ঝাড়খণ্ডের চার বাসিন্দা। অটো চালক প্রবীর দাস (২২)কে খুনের অভিযোগে পূর্ব বর্ধমানের কালনা থানার পুলিশ যে চার জনকে গ্রেপ্তার করছে তাদের নাম মনোজ মূর্মূ,মুক্তার কিস্কু,সুরেশ হেমব্রম ও যোগেন্দ্র হাঁসদা।এদের সকলেরই বাড়ি ঝাড়খন্ড রাজ্যে । পুলিশ দাবি করেছে জেরায় ধৃত চারজনই পেশায় অটো চালক যুবককে খুনের কথা কবুল করেছে।খুনের ধারায় মামলা রুজু করে পুলিশ চার ধৃতকেই সোমবার কালনা মহকুমা আদালতে পেশ করে নিজেদের হেপাজতে নিয়েছে।ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ খুনের মোটিভ জানার চেষ্টা চালাচ্ছে। পুলিশের কাছে মৃতের পরিবার ধৃতদের দৃষ্টান্ত মূলক সাজার দাবি করেছে ।
জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ধ্রুব দাস জানিয়েছেন, যুবককে খুনের ঘটনায় ৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে । ধৃতরা ঝাড়খণ্ড রাজ্যের বাসিন্দা । জেরায় ধৃতরা যুবককে খুনের কথা স্বীকার করেছে। তদন্তের প্রয়োজনে তাদের হেপাজতে নেওয়া হয়েছে ।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পেশায় অটো চালক প্রবীর দাসের বাড়ি কালনার অকালপৌষ পঞ্চায়েতের পাঁচরকি গ্রামে। গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় প্রবীর বাড়ি থেকে বের হন । তার পর থেকে তিনি নিখোঁজ থাকেন। পরিবারের লোকজন বিভিণ্ন জায়গায় খোঁজ চালিয়েও প্রবীরের কোন হদিশ পান না। তার নোবাইল ফোনটিও সুইচ অফ থাকে। নিরুপায় হয়ে পরিবারের লোকজন যুবকের নিখোঁজ হওয়ার বিষয়ে কালনা থানায় অভিযোগ দায়ের করে । এই অভিযোগ পেয়েই অপহরনের মামলা রুজু করে কালনা থানার পুলিশ তদন্তে নামে। তারই মধ্যে রবিবার সকালে বাড়ির অদূরের একটি পুকুরে গলায় গামছার ফাঁস লাগানো ওই যুবকের মৃতদেহ ভেসে ওঠে। এমনটা দেখেই পরিবারের লোকজন প্রবীর কে খুন করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন। মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে নিশ্চিৎ হতে পুলিশ যুবকের মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য কালনা মহকুমা হাসপাতালে পাঠায়।এরমধ্যেই ওই নিখোঁজ যুবকের মোবাইল ফোনটি চালু হয়ে যায় । পুলিশ ফোনটির টাওয়ার লোকেশন ট্রাক করে দুজনকে আটক করে।
পুলিশ এও জানিয়েছে ,আটক দু’জনকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করতেই তারা প্রবীরকে খুনের কথা স্বীকার করে নেয়।ধৃতরা জানায়,পয়লা ডিসেম্বর একটি বিষয় নিয়ে ওই পুকুরের সামনেই তাদের সঙ্গে প্রবীরের প্রথমে বচসা, বাধে, পরে মারপিট হয়।ওই সময়েই তারা চারজন মিলে গলায় গামছা পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে প্রবীরকে খুন করে।প্রমাণ লোপাট করতে তারা প্রবীরের দেহ ওই পুকুরের জলে ফেলে দেয়। রবিবার রাতের মধ্যে পুলিশ খুনের ঘটনায় জড়িত চারজনকেই গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয় । অভিযুক্তদের জেরা করে পুলিশ
আরও জানতে পেরেছে,ধৃতরা ঝাড়খন্ড রাজ্য থেকে এসে এই রাজ্যের কালনার সাধন প্রামাণিক নামে এক চাষির জমির ধান গাছ কাটার কাজে লেগেছিল । সেখানেই তাদের সঙ্গে প্রবীরের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক তৈরি হয়।ঘটনার দিন সন্ধ্যায় প্রবীবের সঙ্গে তাদের চরম অশান্তি বাধলে প্রবীরকে খুন হতে হয় ।।