প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়,বর্ধমান,১৪ মার্চ : বাইকে চালিয়ে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা দিতে যাওয়ার পথে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে জখম হলো চার উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী । মঙ্গলবার উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা শুরুর দিনেই এমন ঘটনা ঘটেছে পূর্ব বর্ধমানের জামালপুর থানার জোৎশ্রীরাম এলাকায়। চিকিৎসার জন্য যখম পরীক্ষার্থীদের উদ্ধার করে জামালপুর ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্র নিয়ে যাওয়া হয়। চিকিৎসার পর সেখানেই ছাত্রদের পরীক্ষা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়।পরীক্ষার্থীদের হাত ও পায়ে মারাত্মক চোট থাকায় তারা কিভাবে পরীক্ষা দেবে তা নিয়ে উদ্বিগ্ন তাদের পরিবার-পরিজন। উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার দিনগুলিতে পুলিশ যাতে সড়ক পথে যানবাহন চলাচল নিয়ন্ত্রণে সদর্থক ভূমিকা নেয় সেই দাবি এদিন করেছেন পরীক্ষার্থীদের অভিভাবকরা ।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, চার উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর নাম হেমন্ত ঘোষ, সায়ন ঘোষ, অরূপ মিদ্যা ও অমরেশ ঘোষ। জামালপুরে জোৎশ্রীরাম হাই স্কুলের এই চার ছাত্রের বাড়ি রায়না ২ ব্লকের আদমপুর এলাকায় । পৃথক দুটি বাইকে চড়ে ছাত্ররা এদিন পরীক্ষা কেন্দ্র জামালপুরের বেরুগ্রামের হাই স্কুলের উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছিল। পথে জোৎশ্রিরাম সমবায় সমিতির সামনে আলু বোঝাই একটি ট্রাক্টরকে পাশ কাটিয়ে যেতে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ছাত্ররা বাইকসহ রাস্তায় ছিটকে পড়ে। তাতেই তারা যখন হয়। সেই অবস্থার মধ্যেই জয় শ্রীরাম এলাকার মানুষজন তাদের উদ্ধার করে পরীক্ষা কেন্দ্র বেরুগ্রামের হাইস্কুলে পৌঁছে দেয়। পরীক্ষকরা পরীক্ষার্থীদের রক্তাক্ত অবস্থায় দেখেই দ্রুত তাদের জামালপুর ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে পাঠানোর ব্যবস্থা করে। এই খবর পেয়ে হাসপাতালে পৌঁছান জামালপুরের বিধায়ক অলক মাঝি,পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি ভূতনাথ মালিক, ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি মেহেমুদ খান ও জামালপুর থানার পুলিশ আধিকারিকরা। বিএমওএইচ ঋত্বিক ঘোষের সঙ্গে আলোচনা করে তারা জামালপুর ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রেই ছাত্রদের পরীক্ষা দেওয়ার ব্যবস্থা করেন।
বিএমওএইচ ঋত্বিক ঘোষ জানিয়েছেন, উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা দিতে যাওয়ার পথে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে চার ছাত্র জখম হয়। তিন ছাত্রের আঘাত কেমন গুরুতর না থাকলেও এক ছাত্র একটু বেশি জখম হয়েছে। জরুরী ভিত্তিতে চার ছাত্রের চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়। চোট লাগলেও ছাত্রদের শারীরিক অবস্থা এখন স্থিতিশীল। তবুও তাদের মানসিক ও শারীরিক অবস্থার কথা বিবেচনা করে এদিন জামালপুর ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চিকিৎসকদের অবজারভেশানে চার ছাত্রের পরীক্ষা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
বিধায়ক অলক মাঝি বলেন, অপ্রত্যাশিত ঘটনা । অল্প বয়সী পরীক্ষার্থীরা নিজেরাই বাইক চালিয়ে পরীক্ষা কেন্দ্রের দিকে যাচ্ছিল। এমনটা না হওয়ায় কাম্য ছিল । এই ব্যাপারে অভিভাবকদের সচেতন হওয়া অত্যন্ত জরুরি। পরীক্ষা নিয়ামকের সঙ্গে কথা বলে জামালপুর ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে বসেই চার ছাত্র যাতে পরীক্ষা দিতে পারে তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এদিন পরীক্ষার পূর্ণ সময় কালটা আমিও হাসপাতালে থাকবো। পরীক্ষা শেষে ছাত্রদের বাড়ি পৌঁছে দেয়ার জন্য অ্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থা তৈরি রাখা হয়েছে ।।