এইদিন ওয়েবডেস্ক,১৯ মে : টাইটানিক জাহাজ ডুবে যাওয়া পৃথিবীর সবচেয়ে বড় সামুদ্রিক দূর্ঘটনা গুলোর মধ্যে অন্যতম । ১৯১২ সালের ১৫ এপ্রিল ইংল্যান্ডের সাউদাম্পটন থেকে নিউইয়র্ক সিটিতে যাওয়ার সময় নিউফাউন্ডল্যান্ডের কাছে একটি আইসবার্গের আঘাতে ডুবে যায় টাইটানিক । প্রায় ১,৫০০ জলযাত্রীর সলিল সমাধি হয় । এর ৬৩ বছর পর ১৯৮৫ সালে কানাডার উপকূল থেকে প্রায় ৪৩৫ মাইল (৭০০কিলোমিটার) দূরে সমুদ্রের প্রায় ১২,৫০০ ফুট (৩,৮০০ মিটার) নিচে বিলাসবহুল বৃহদাকার ওই জাহাজটির ধ্বংসাবশেষ দেখতে পাওয়া যায় ।
সমদ্রের গভীরে টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষের কিছু ৩ ডি ছবি সম্প্রতি সামনে এসেছে । বিশেষজ্ঞরা জাহাজের ভিতরে গিয়ে ক্যামেরা এবং রিমোট চালিত মেশিন ব্যবহার করে এর ছবি তুলেছেন। প্রথমবারের মতো পুরো ধ্বংসাবশেষের ছবি তোলা হয়েছে । ছবিগুলো ম্যাগেলান লিমিটেড প্রকাশ করেছে । এটি একটি গভীর সমুদ্র ম্যাপিং কোম্পানি। আটলান্টিক প্রোডাকশনও তাদের সাহায্যে এগিয়ে এসেছিল । জল বিহীন সমুদ্রে বিধ্বস্ত জাহাজটি কেমন দেখায়, ছবির মধ্য দিয়ে মূলত সেটাই তুলে ধরা হয়েছে । ছবিগুলোর উপর একটি তথ্যচিত্র তৈরি করা হয়েছে ।
বিশেষজ্ঞ দল ২০২২ সাল থেকে জাহাজের ধ্বংসাবশেষের ম্যাপিং শুরু করে । সময় লেগেছে প্রায় ২০০ ঘন্টা । দূর চালিত মেশিন ব্যবহার করে গত বছর গ্রীষ্মে উত্তর আটলান্টিকে পুরো জাহাজের ধ্বংসাবশেষ এবং আশেপাশের ৩ মাইল এলাকা ম্যাপিং করে ওই দলটি । টাইটানিকের যাত্রীদের ব্যক্তিগত জিনিসপত্র যেমন জুতা এবং ঘড়ি ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে থাকতে দেখা যায় ।
ম্যাগেলানের প্রতিষ্ঠাতা এবং প্রধান নির্বাহী রিচার্ড পারকিনসন অনুমান করেছেন যে সর্বসাকুল্যে ৭,১৫,০০০ ইমেজ সহ ডেটা সংগৃহীত হয়েছে । এর আগে কখনও জলের এত গভীরে সাধারণ ছবির চেয়ে ১০ গুণ বড় ৩ ডি ছবি সংগ্রহ করা হয়নি ।
ডকুমেন্টারি নির্মাতা আটলান্টিক প্রোডাকশনের প্রধান অ্যান্থনি গেফেন বলেছেন,’এটি সম্পূর্ণরূপে এক থেকে এক ডিজিটাল অনুলিপি, হুবহু টাইটানিকের মত ।’ তিনি ছবিগুলিকে টাইটানিকের ‘যমজ’ বলে অবিহিত করেছেন । গেফেন বলেছেন টাইটানিকের পূর্ববর্তী চিত্রগুলির অধিকাংশই কম আলোর কারনে অস্পষ্ট ছিল । কিন্তু নতুন ফটোরিয়েলিস্টিক ৩ ডি মডেলটিতে নম এবং স্টার্ন উভয় অংশকেই ক্যাপচার করা হয়েছে, যা ডুবে যাওয়ার পর বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছিল ।
তিনি বলেন,এই চিত্রগুলির মাধ্যমে ১৯১২ সালে ধ্বংস হওয়া এই জাহাজটি আবার অধ্যয়ন করা সহজ হবে । বিজ্ঞানীরা নিশ্চিত যে এবার তারা জাহাজ ডুবির প্রকৃত কারণ খুঁজে বের করতে সক্ষম হবেন ।।