এইদিন ওয়েবডেস্ক,০৫ মে : ভূগর্ভস্থ একটি গোপন কুঠুরিতে ছোট ছোট গদি বিছানো । তার উপরে বসে আছে কয়েকজন মেয়ে । তাদের মুখ ঢাকা । মেয়েগুলির কোমরের সঙ্গে বাঁধা লোহার শিকল তালাবন্ধ করে রাখা হয়েছে ঘরের দেওয়ালের লাগানো আঁকশিতে । গোপন কুঠুরিটি সিরিয়ার ইসলামি সন্ত্রাসবাদী সংগঠন আইএসআইএস-নিয়ন্ত্রিত আল-হল শরণার্থী শিবির অংশ এবং অল্পবয়সী মেয়েগুলি সন্ত্রাসবাদীদের যৌনদাসী । বলা হচ্ছে যে ওই ভিডিওটি ২০২২ সালের । নতুন করে ভিডিওটি ভাইরাল হয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ।
২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে সিরিয়ান ডেমোক্রেটিক ফোর্সের নারী সুরক্ষা ইউনিটকে সাথে নিয়ে এমন ৩৮ জন কিশোরীকে উদ্ধার করেছিল মার্কিন বাহিনী । উদ্ধার হওয়া মেয়েদের বয়স ১০ থেকে ১৫ বছরের মধ্যে । তাদের অধিকাংশই ইয়েজিদি সম্প্রদায়ের । তখন দাবি করা হচ্ছিল যে “দ্য কেরালা স্টোরি” ছবিতে বর্ণিত কাহিনী আদপে সত্য ঘটনা অবলম্বনে নির্মিত এবং হিন্দু মেয়েদের ‘লাভ জিহাদে’ ফাঁসিয়ে তাদের সিরিয়ার আইএসআইএস-নিয়ন্ত্রিত আল-হল শরণার্থী শিবিরে যৌন দাসী হিসাবে বন্দি করে রাখা হয়েছিল । যদিও সেই দাবির সপক্ষে সুনির্দিষ্ট কোনো প্রমান পাওয়া যায়নি এযাবৎ ।
তবে ভিডিওটি সত্য বলে প্রমানিত হয়েছে এবং কুখ্যাত সন্ত্রাসবাদী সংগঠন ইসলামি স্টেটের সন্ত্রাসীদের দ্বারা অল্প বয়সী মেয়েদের প্রতি পশুসুলভ আচরণের একটা প্রমান ওই ভিডিওটি । ভিডিওতে একজন ১০-১২ বছর বয়সী মেয়ের মুখ দেখতে পাওয়া যায় । তার উসকো খুসকো চুল এবং বিস্ফোরিত দু’চোখে ছিল আতঙ্কে ভরা ।
নরপশু ইসলামি স্টেট দ্বারা মেয়েদের উপর বর্বরতার অগনিত নজির এযাবৎ প্রকাশ্যে এসেছে । পরিসংখ্যান অনুযায়ী, সিরিয়ায় ইসলামিক স্টেটের খিলাফত প্রতিষ্ঠার পর প্রায় ২০,০০০ মহিলা এবং ৫০,০০০ শিশুকে আল-হল শিবিরে বন্দি করে রাখা হয় । মহিলা ও শিশুকন্যারা সন্ত্রাসীদের দ্বারা নিয়মিত গনধর্ষণের শিকার হত । খিলাফতের সময় গনধর্ষণের ফলে জন্মগ্রহণকারী শিশুর সংখ্যা ছিল আনুমানিক ২০,০০০ । শুধু গনধর্ষণই নয়,নির্মম শারিরীক নির্যাতনের শিকার হতে হত অল্প বয়সী মেয়েদের । একজন ১৪ বছর বয়সী এমন একজন কিশোরীকে মার্কিন সেনা উদ্ধার করেছেন যার ঘাড়ের ৩ টি হাড় ভাঙা ছিল । ঠোঁট ছিল কামড়ের গভীর ক্ষত চিহ্ন । মেয়েটিকে উদ্ধারের পর বাঁচানোর বহু চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন চিকিৎসকরা । ওই কিশোরী একজন আজারবাইজানীয় মেয়ে । যে ইসলামিক স্টেটের খিলাফতের অধীনে তার মায়ের সাথে এই বছরের শুরু পর্যন্ত বসবাস করেছিল । কয়েক মাস পর আল-হল বাস্তুচ্যুতি শিবির থেকে আইএসআইএস সন্ত্রাসীদের চোখে ধুলো দিয়ে সে পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়। কিন্তু সন্ত্রাসীদের পাশবিক অত্যাচারে সৃষ্ট ক্ষতই তার মৃত্যুর কারন হয় ।।