এইদিন ওয়েবডেস্ক,পাকিস্তান,২৮ সেপ্টেম্বর : পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের কুররাম জেলায় শিয়া-সুন্নি সংঘর্ষে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৩৭ জনে দাঁড়িয়েছে। গত ছয়দিন ধরে চলা এই সংঘর্ষে এ পর্যন্ত ১৫৩ জন আহত হয়েছেন বলে শুক্রবার স্থানীয় কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। প্রাদেশিক রাজধানী পেশোয়ারের এক নিরাপত্তা কর্মকর্তা জানান, সংঘর্ষে অন্তত ২৮টি বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এদিকে জানা গেছে যে মধ্যস্থতার জন্য সরকারী প্রচেষ্টা সত্ত্বেও, আফগান সীমান্তের কাছাকাছি একাধিক এলাকায় সহিংসতা ছড়িয়ে পড়েছে, সাদ্দা এবং বালিশখেলের মতো শহরগুলিকে প্রভাবিত করেছে। রাস্তা অবরুদ্ধ রয়েছে, বন্দুকযুদ্ধের তীব্রতা বাড়ার সাথে সাথে খাদ্য ও সরবরাহ বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। স্কুলগুলি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে । কর্তৃপক্ষ শান্তি পুনরুদ্ধারের জন্য যুদ্ধবিরতির জন্য চাপ অব্যাহত রেখেছে ।
প্রসঙ্গত,পূর্বে আধা-স্বায়ত্তশাসিত এলাকা কুররামে সুন্নি ও শিয়া সম্প্রদায়ের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে। বছরের পর বছর ধরে এ ধরনের সংঘর্ষে শত শত মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। গত জুলাই মাসে একই এলাকায় জমি নিয়ে সংঘর্ষে ৩৫ জন নিহত হয়েছিল। উপজাতীয় পরিষদ (জিরগা) যুদ্ধবিরতি ঘোষণা এবং সরকারি কর্মকর্তাদের মধ্যস্থতায় সেই সংঘর্ষের অবসান ঘটে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে কুররামে কর্মরত এক কর্মকর্তা জানান, নিরাপত্তা বাহিনী এবং স্থানীয়দের মধ্যস্থতা সত্ত্বেও জেলার ১০টি এলাকায় ভারী অস্ত্রশস্ত্র ব্যবহার করে সংঘর্ষ অব্যাহত রয়েছে। তিনি বলেন,’জমি নিয়ে শুরু হওয়া বিরোধ এখন পুরোদস্তুর সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষে রূপ নিয়েছে। দুই পক্ষই স্বয়ংক্রিয় ও আধা-স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র, এমনকি মর্টার শেলও ব্যবহার করছে ।’
পাকিস্তানে উপজাতীয় ও পারিবারিক বিরোধ নিত্য ঘটনা। তবে খাইবার পাখতুনখোয়ার মতো পার্বত্য উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে এ ধরনের বিরোধ বিশেষ করে দীর্ঘস্থায়ী ও রক্তক্ষয়ী হয়ে থাকে, কারণ সেখানকার জনগোষ্ঠী ঐতিহ্যবাহী উপজাতীয় সম্মান রক্ষার নীতি অনুসরণ করে। প্রধানত সুন্নি মুসলিম অধ্যুষিত পাকিস্তানে শিয়া সম্প্রদায় দীর্ঘদিন ধরে বৈষম্য ও সহিংসতার শিকার ।।