এইদিন ওয়েবডেস্ক,ঢাকা,০৫ অক্টোবর : এক মুসলিম তরুনীকে দেখে একনজরে দেখেই প্রেমে পড়ে গিয়েছিল হিন্দু যুবক । তরুনীকে সে প্রেমের প্রস্তাব দেয় । সেই প্রস্তাবে তরুনী রাজি হয়ে গেলে দু’জনে স্বামী-স্ত্রীর মত বসবাস শুরু করে দেয় । কিন্তু বাধ সাধে তরুনীর কট্টর ইসলামি মানসিকতা । সম্প্রতি প্রেমিককে ধর্মান্তরিত হওয়ার জন্য চাপ দিতে শুরু করেন তরুনী । কিন্তু নিজ ধর্মত্যাগের কোনো ইচ্ছাই ছিল না ওই হিন্দু যুবকের । শেষে প্রেমিকার লাগাতার চাপ সহ্য করতে না পেরে প্রেমিকাকে ফেলে বেপাত্তা হয়ে যায় প্রেমিক । বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার মীরপুর এলাকার ঘটনা ।
সোশ্যাল মিডিয়ায় ওই মুসলিম তরুনীর বক্তব্যের ভিডিও ভাইরাল হয়েছে । তরুনী জানিয়েছেন, তিনি ঢাকার মীরপুরের একটি পোশাক তৈরির দোকানে দর্জির কাজ করেন । বছর তিনেক আগে দোকানে আসেন তার প্রেমিক ইন্দ্রজিৎ কুমার সরকার । একে অপরকে দেখে তারা প্রেমে পড়ে যান । ফোন নম্বর দেওয়া নেওয়াও হয় । ইন্দ্রজিৎ তাকে পান খাওয়ায় । ওই ঘটনার দিন সাতেক পর ইন্দ্রজিতের ফোন আসে তার মোবাইলে ।
তরুনী বলেন,’ইন্দ্রজিৎ আমায় বলে কিছু কথা আছে । কোনো ফাঁকা জায়গায় গিয়ে সেই কথা সে বলতে চায় । এরপর তার বাইকে চেপে আমি মীরপুরে তার ভাড়া ঘরে যাই । কিন্তু ঘরে যাওয়ার পর ইন্দ্রজিৎ আমার শরীরে হাত বোলাতে শুরু করলে আমি কেমন যেন হয়ে যাই । আমাদের শারিরীক মিলন হয় তখন । এরপর আমি কাঁদতে কাঁদতে ইন্দ্রজিতের ঘর থেকে বেড়িয়ে আসি ।’
তরুনীর কথায়,’ইন্দ্রজিৎ বাইরে এসে আমায় বলে, ‘এবার যে কথা বলার জন্য তোমায় ডেকেছিলাম সেটা বলবো’ । আমি বলি,’বলুন’ । তখন সে বলে আমি তিনটি শর্ত দিচ্ছি, যেটা খুশি তুমি রাজি হতে পারো । প্রথমত,তোমায় আমার খুব ভালো লেগেছে, তাই তুমি আমায় বিয়ে করতে পারো । দ্বিতীয়ত, আমার সাথে সম্পর্ক রেখে দিতে পারো । অথবা তৃতীয়ত, আমার সাথে শুধুমাত্র বন্ধুত্ব রেখে দিতে পারো । আমি বিয়েতে রাজি হয়ে যাই ।’
প্রতিবেদন অনুযায়ী,তরুনী বিয়েতে রাজি হয়ে গেলে ইন্দ্রজিৎ প্রেমিকার সঙ্গে লিভ টুগেদার সম্পর্ক গড়ে তোলেন । মীরপুরে ভাড়া বাড়িতেই প্রেমিকাকে নিয়ে থাকত সে । কিন্তু সম্প্রতি কিছু সময় ধরে প্রেমিককে ধর্মান্তরিত হয়ে বিয়ে করার জন্য চাপ দিতে শুরু করেন ওই মুসলিম তরুনী । এনিয়ে দিন সাতেক আগে ঝামেলা চরম পর্যায়ে চলে যায় । এরপর প্রেমিকাকে কিছু না বলে গ্রামের বাড়ি ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলার কামালপুরের ঘোড়াখালি গ্রামে পালিয়ে আসেন ইন্দ্রজিৎ । গত শুক্রবার সেখানে পৌঁছে গিয়ে বিয়ে করে স্ত্রীর স্বীকৃতির দাবিতে ইন্দ্রজিতের বাড়িতে অনশন শুরু করেন ওই মুসলিম তরুনী । যদিও তার আগেই বাড়ি থেকে পালিয়ে যান ইন্দ্রজিৎ । তরুনী ক্যামেরার সামনে বলেছেন,’আমি হিন্দু হব না, ইন্দ্রজিৎকেই মুসলিম হতে হবে ।’ তিনি আরও দাবি করেন যে ইন্দ্রজিৎ মুসলিম হওয়ার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছিল তাকে ।
জানা গেছে,ওই মুসলিম তরুনীর ধর্নার খবর এলাকায় চাওড় হতেই শোড়গোল পড়ে যায় । স্থানীয় মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষ দাবি তোলেন যে ইন্দ্রজিৎকে ধর্মান্তরিত হয়ে ওই তরুনীকে বিয়ে করতে হবে । এদিকে বিষয়টি স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ওয়ালিদ হাসান মামুদের কানে যেতেই তিনি মিটমাট করতে উদ্যোগী হন । শেষে এক লাখ টাকায় বিষয়টি রফা করে দেন তিনি । যদিও ইন্দ্রজিতের পরিবারের কাছে সেই সময় অত টাকা না থাকায় তরুনীর হাতে তারা ৮০,০০০ টাকা তুলে দেন এবং চেয়ারম্যানের উপস্থিতিতে তরুনীকে দিয়ে একটা স্টাম্প পেপারে স্বাক্ষর করে নেওয়া হয় । এদিকে অসন্তুষ্ট তরুনীর প্রতিক্রিয়া,’এক লাখ টাকায় আমার ইজ্জত বিক্রি করে দিল চেয়ারম্যান ।’।