এইদিন ওয়েবডেস্ক,টুনিস,২৭ মার্চ : তিউনিসিয়ার উপকূলের কাছে জাহাজডুবিতে ১০ জন অভিবাসীর মৃত্যু হয়েছে । এটি কয়েক ঘণ্টার মধ্যে ডুবে যাওয়া দ্বিতীয় জাহাজ । সব মিলিয়ে মৃতের সংখ্যা ২৯ জনে পৌঁছেছে বলে জানিয়েছেন তিউনিসিয়ার ন্যাশনাল গার্ডের আধিকারিক হাউসেম জেবাবলি । এর আগে রবিবার একটি মানবাধিকার গোষ্ঠী জানিয়েছিল যে ১৯ জন শরণার্থীকে নিয়ে ইতালি যাওয়ার পথে ভূমধ্যসাগর অতিক্রম করতে গিয়ে প্রবল ঢেউয়ের জেরে জাহাজটি ঢুবে যায় ।
ফোরাম ফর সোশ্যাল অ্যান্ড ইকোনমিক রাইটস (এফটিডিইএস)-এর কর্মকর্তা রোমধনে বেন রয়টার্স বার্তা সংস্থাকে বলেছেন যে স্ফ্যাক্স সৈকত থেকে যাত্রা শুরু করার পরে শরণার্থী এবং অভিবাসীদের বহনকারী একটি জাহাজ মাহদিয়া উপকূলে ডুবে গেলে মৃত্যুর ঘটনা ঘটে । তিনি বলেন, তিউনিসিয়ার উপকূলরক্ষীরা নৌকা থেকে পাঁচজনকে উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছে ।
প্রসঙ্গত,বিগত চার দিনে শরণার্থী এবং অভিবাসীদের বহনকারী কমপক্ষে পাঁচটি জাহাজ দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর স্ফ্যাক্সে ডুবে গেছে । এতে ৬৭ এখনো জন নিখোঁজ রয়েছে এবং নয়জন মারা গেছে । তিউনিসিয়ার উপকূলরক্ষীরা আগে বলেছিল যে তারা গত চার দিনে তারা ইতালির মুখে যাওয়া প্রায় ৮০ টি নৌকা থামিয়েছে এবং ৩,০০০-এরও বেশি লোককে আটক করেছে, যাদের বেশিরভাগই সাব-সাহারান আফ্রিকান দেশ থেকে এসেছে ।এদিকে ইতালির সংবাদ সংস্থা এএনএস জানিয়েছে যে শনিবারে রেকর্ড সংখ্যক আশ্রয়প্রার্থী ইতালিতে ঢুকেছে । গত ২৪ ঘন্টার মধ্যে ২,০০০ এরও বেশি আশ্রয়প্রার্থী ইতালীর ল্যাম্পেডুসায় দ্বীপ পৌঁছেছে বলে জানিয়েছে ওই সংবাদ মাধ্যমটি ।
জাতিসংঘের তথ্য অনুসারে,গত বছর তিউনিসিয়া থেকে ইতালি যাওয়া শরণার্থীর সংখ্যা যেখানে ১,৩০০ ছিলে সেখানে চলতি বছরে এযাবৎ ১২,০০০ লোক ইতালিতে পৌঁছেছে । আগে শরণার্থী এবং অভিবাসীদের প্রধান প্রস্থান পয়েন্ট ছিল লিবিয়া । কিন্তু এখন তারা ইতালিকে বেছে নিচ্ছে ।
এফটিডিইএস-এর পরিসংখ্যান অনুসারে, তিউনিসিয়ার উপকূলরক্ষী চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে ১৪,০০০-এরও বেশি শরণার্থী এবং অভিবাসীকে নৌকায় উঠতে বাধা দিয়েছে, যা গত বছরের একই সময়ে এই সংখ্যাটা ছিল ২,৯০০ জন।
ইতালীয় উপকূলরক্ষী বৃহস্পতিবার জানিয়েছে যে তারা দক্ষিণ ইতালীয় উপকূলে দুটি অভিযানে প্রায়। ৭৫০ আশ্রয়প্রার্থীকে উদ্ধার করেছে ।
ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি শুক্রবার বলেছেন যে তিউনিসিয়ায় আর্থিক স্থিতিশীলতা রক্ষা করা না হলে উত্তর আফ্রিকা থেকে শরণার্থী এবং অভিবাসীদের একটি বিশাল ঢেউ দেখতে পাবে ইউরোপ। তিনি আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল এবং কিছু ধনী দেশগুলিকে তিউনিসিয়ার দ্রুত পতন এড়াতে সাহায্য করার আহ্বান জানিয়েছেন ।।