এইদিন ওয়েবডেস্ক,পাপুয়া নিউগিনি,২৫ জুলাই : পাপুয়া নিউগিনির উত্তরাঞ্চলের সেপিক প্রদেশের তিনটি গ্রামে জাতি হিংসার বলি হল ১৬ শিশুসহ অন্তত ২৬ জন। এখনো তিন শতাধিক মানুষ নিখোঁজ রয়েছে । ফলে মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছে কর্তৃপক্ষ । আঙ্গোরাম থানার কমান্ডার ইন্সপেক্টর পিটার মান্ডি আজ বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের জানান, পূর্ব সেপিকের আঙ্গোরাম জেলার সেপিক নদীর তীরবর্তী তামারা, তাম্বারি এবং আংরুমারা গ্রামে হত্যার আগে প্রচুর সংখ্যক নারী ও অল্পবয়সী মেয়েকে ধর্ষণ করা হয়েছিল ।
তিনি বলেন, ধর্ষণ ও গণহত্যা একটি গ্যাংয়ের ৩০ জনেরও বেশি যুবকের একটি দল দ্বারা পরিচালিত হয়েছিল ৷ গত বুধবার, বন্দুক, ছুরি এবং তারের ক্যাটাপল্ট নিয়ে সজ্জিত দলটি আংরুমারা গ্রামে আক্রমণ করে, বাড়িঘর পুড়িয়ে দেয় এবং একজন বৃদ্ধ এবং ৫ বছরের একটি ছেলেকে হত্যা করে । পরের দিন, তারা তামবাড়ি গ্রামে আক্রমণ করে, মহিলাদের এবং যুবতী মেয়েদের ধর্ষণ করে এবং তারপরে তাদের ছুরি দিয়ে কেটে দেয়, ছোট বাচ্চাদেরও ছুরি দিয়ে কেটে দেয় । তিনি বলেন, আংরুমারায় তিনজন এবং তাম্বরীতে ২৩ জনের মৃত্যু হয়েছে, যাদের মধ্যে ১৬ জন শিশু রয়েছে। এখন পর্যন্ত, উভয় গ্রাম থেকে ২৬ জনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে,তবে নিখোঁজ গ্রামবাসীদের এখনও হিসাব পাওয়া যায়নি ।’ তৃতীয় গ্রাম তামারায় কখন আক্রমণ করা হয়েছিল তা স্পষ্ট নয় বলে তিনি জানান । তিনি আরও জানান যে গ্রামগুলি একটি প্রত্যন্ত অঞ্চলে অবস্থিত যেখানে রাস্তা নেই । স্থানীয় পুলিশ মঙ্গলবার এলাকায় পৌঁছেছে, বৃহস্পতিবার জাতীয় পুলিশ থেকে আরও বাহিনী আসে । পুলিশ বলেছে যে তারা সেপিক নদীর ধারে গ্যাংটির সন্ধান করবে এবং মৃতের সংখ্যা আরও বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে ।
বুধবার (২৪ জুলাই) জাতিসংঘের মানবাধিকার প্রধান ভলকার টার্ক এক বিবৃতিতে বলেন,পাপুয়া নিউগিনিতে প্রাণঘাতী সহিংসতা শুরু হওয়ায় আমি শঙ্কিত। এটি ভূমি এবং লেকের মালিকানা ও ভোগ করা নিয়ে বিরোধের ফলে সৃষ্ট হয়েছে বলে আপাতদৃষ্টিতে ধারণা করা হচ্ছে।’
হামলায় প্রাণ বাচাঁনোর জন্য পালিয়ে যেতে বাধ্য হন স্থানীয়রা। এ সময় অন্তত দুই শতাধিক গ্রামবাসী গ্রাম ছেড়ে পালিয়ে গেছেন। এদের মধ্যে অনেকেই এখনও নিখোঁজ। নিখোঁজদের সন্ধানে তল্লাশি চালাচ্ছে কর্তৃপক্ষ। নিহতের সংখ্যা অর্ধশত ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। প্রসঙ্গত, পাপুয়া নিউগিনিতে বহুসংখ্যক ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী ও ভিন্ন ভাষাভাষীর জনগোষ্ঠী বসবাস করে। এদের মধ্যে সংঘাত লেগেই থাকে। গত দশক থেকে এ অঞ্চলগুলোর সংঘাতে তীর ও ধনুকের বদলে সামরিক রাইফেল ব্যবহার করা শুরু হয়েছে। এতে সহিংসতার মাত্রা আরও মারাত্মক হয়ে উঠেছে।
গত মে মাসে দেশটির এনগা প্রদেশে এ ধরনের সংঘাতে অন্তত ৮ জন নিহত ও ৩০টি বাড়ি পোড়ানো হয়েছে। এর আগে গত ফেব্রুয়ারিতে প্রদেশটির দুর্গম পার্বত্য অঞ্চলে সংঘাতে অর্ধ শতাধিক মানুষ নিহত হন।।