এইদিন ওয়েবডেস্ক,বর্ধমান,১৬ জুন : লুকিয়ে লুকিয়ে গোটা গোটা লোহার পেরেক থেকে কয়েন গলাধঃকরণ করা ছিল অভ্যাস । আর দিনের পর দিন এভাবে পেরেক গিলে পেটের মধ্যে জমা হয়েছিল প্রায় ২৫০ টি পেরেক। তিরিশের ওপর কয়েন। কার্যত এক লোহাখেকো মানুষ বলা যায়। আর এমনই লোহাখেকো মানুষের পেট থেকে বের করা হল রাশি রাশি পেরেক ও কয়েন। অসাধ্যসাধন করলেন বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসকরা। এই ঘটনায় রীতিমতো তাজ্জব বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসকরা।
জানা যায় ওই রোগীর নাম শেখ মইনুদ্দিন। বৃহস্পতিবার বর্ধমান হাসপাতালে তার অস্ত্রোপচার হয়। অস্ত্রপচারের পর তিনি অনেকটাই সুস্থ বলে চিকিৎসকরা জানান।
পূর্ব বর্ধমানের মঙ্গলকোটের কৃষ্ণবাটি গ্রামের বাসিন্দা সেখ মইনুদ্দিন(৩৮)। পাঁচ ভাই। তাদের মধ্যে সেজ মইনুদ্দিন। পরিবার সূত্রে জানা যায় বিগত ১৫-১৬ বছর ধরে তিনি মানসিক রোগের শিকার। বর্ধমান হাসপাতালের মানসিক বিভাগে নিয়মিত চিকিৎসা করানো হত।
পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে শনিবার সকাল থেকে হঠাৎ মইনুদ্দিন খাওয়া দাওয়া বন্ধ হয়ে যায়। বিকালের দিকে কেবল একগ্লাস দুধ খান। তাও জোর করে। এছাড়া ছাড়া কিছুই খাই নি তিনি। পরিবারের লোকজন জানান মইনুদ্দিনের পেটে অসহ্য ব্যথা হচ্ছিল। মঙ্গলবার বর্ধমানে একটি বেসরকারি নার্সিংহোমের এক চিকিৎসককের কাছে মইনুদ্দিনকে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। মইনুদ্দিনের এক্সরে করে ধরা পড়ে তার পেটে রয়েছে প্রচুর পেরেক ও কয়েন। মইনুদ্দিনের অপারেশন করার জন্য এক লক্ষ টাকা খরচ হবে বলে নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ জানিয়েছিল। এমনটাই জানান তার আত্মীয়রা। কিন্তু অতটাকা দেওয়ার সামর্থ তাদের ছিল না। বুধবার সকালে তাকে বর্ধমান হাসপাতালে নিয়ে আসা হয় । চিকিৎসকরা এক্স রে করে তাকে ভর্তি করেন। রাতে সার্জারী করে তার পেট থেকে ২৫০ টি পেরেক, ৩৫ টি কয়েন ও বেশ কিছু পাথর কুচি বের করা হয়। আপাতত তিনি সুস্থ আছেন বলে জানাচ্ছেন বর্ধমান হাসপাতালের সুপার তাপস ঘোষ।
রোগীর দাদা সেখ মসলিন উদ্দিন বলেন ,” আমরা ভাবতে পারিনি বিনা খরচে এই অস্ত্রপচার হবে। এত সহজে বর্ধমান হাসপাতালের চিকিৎসকরা ভাইয়ের পেট থেকে এত পেরেক, কয়েন অপারেশন বার করবেন।” বর্ধমান হাসপাতালের চিকিৎসকদের ধন্যবাদ জানিয়েছেন পরিবারের লোকজন।
এখন বর্ধমান হাসপাতালে জরুরিবিভাগের দোতলার একটি বেডে ভর্তি রয়েছেন মইনুদ্দিন। তার এক দাদা ও এক ভাই সর্বক্ষণ নজর রাখছেন। পাছে আবার না পেরেক কয়েন মুখে ভরে দেয়।।