এইদিন ওয়েবডেস্ক,খার্তুম,১৬ এপ্রিল : সুদানের সেনাবাহিনী ও আধাসামরিক বাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষে এখন পর্যন্ত কমপক্ষে ২৫ জন নিহত এবং বেসামরিক নাগরিক সহ আরও ১৮৩ জন আহত হয়েছে বলে জানিয়েছে সুদানিজ ডক্টরস ইউনিয়ন । তবে নিহতদের মধ্যে কতজন বেসামরিক নাগরিক তা এখনও স্পষ্ট নয় । মিডিয়া রিপোর্টে জানা গেছে, সুদানের “র্যাপিড রিঅ্যাকশন ফোর্স” মিলিশিয়া এবং সুদানী সেনাবাহিনীর মধ্যে কয়েকদিন ধরে টানাপোড়েন চলছিল । শনিবার রাজধানী খার্তুমসহ সুদানের অন্যান্য কয়েকটি শহরে দু’পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে । সংঘর্ষের মধ্যেই প্রেসিডেন্ট প্রাসাদ, সেনাপ্রধানের বাসভবন ও খার্তুম বিমানবন্দর দখলে নেওয়ার দাবি করে আরএসএফ। তবে আধা সামরিক বাহিনীর প্রেসিডেন্ট প্রাসাদ দখলের দাবি নাকচ করে দিয়েছে সেনাবাহিনী। জানা গেছে, এদিন প্রচণ্ড গোলাগুলি ও বিস্ফোরণের মধ্য দিয়ে সংঘর্ষের শুরু হয় যা এখনও অব্যাহত রয়েছে । এটাকে প্রাথমিকভাবে আধা সামরিক বাহিনী আরএসএফের অভ্যুত্থান প্রচেষ্টা হিসেবে দেখা হচ্ছে।
এক সাক্ষাৎকারে আরএসএফ কমান্ডার জেনারেল মোহামেদ হামদান দাগালো সেনাপ্রধান জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহানকে ‘ক্রিমিনাল’ আখ্যা দিয়ে বলেছেন, সেনাবাহিনীই অভ্যুত্থান চেষ্টা করছে। আরএসএফ সেনাদের সংঘর্ষে বাধ্য করা হয়েছে।
আরএসএফ প্রধান আরও বলেন,বর্তমান লড়াই একটি শান্তিপূর্ণ সমাধানের পথ প্রশস্ত করবে এবং সব অপরাধীর বিচার হবে। তার কথায়, ‘এই লড়াই কখন শেষ হবে তার কোনো সময়সীমা আমি দিতে পারছি না। তবে আমরা যতটা সম্ভব কম ক্ষয়ক্ষতির মধ্যদিয়ে এই লড়াই শেষ করতে চাই।’
সুদানের সেনাবাহিনীর মুখপাত্র র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সের মিলিশিয়াদের বিরুদ্ধে সেনাবাহিনীর অবস্থানে হামলার অভিযোগ করেছেন।
অন্যদিকে আধাসামরিক বাহিনী বলছে, সুদানের সেনাবাহিনী এই দেশের দক্ষিণে তাদের ক্যাম্পে হামলা চালিয়ে গেরিলা গ্রুপগুলোকে ধ্বংস করতে চায়। এদিকে পশ্চিমা দেশ এবং আঞ্চলিক নেতারা উভয়পক্ষকে উত্তেজনা হ্রাস করতে এবং দেশটিকে বেসামরিক শাসনে ফিরিয়ে আনতে আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার জন্য একসাথে কাজ করতে আহ্বান জানিয়েছে ।কমান্ডার হামদান আরও বলেন, ‘আমি আপনাদেরকে আশ্বস্ত করছি, সশস্ত্র বাহিনীর ইউনিটগুলো মেরোওয়েতে আমাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছে। অন্যান্য অনেক ইউনিট আত্মসমর্পণ করেছে। আল-বুরহান একজন ক্রিমিনাল। তিনি একজন মিথ্যাবাদী, মিথ্যা গুজব ছড়াচ্ছেন। তার কথা কারও শোনা উচিত নয়।’
অন্যদিকে আরএসএফ কমান্ডারের দাবি নাকচ করে দেন সেনাপ্রধান জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহান। তিনি বলেন, প্রেসিডেন্ট প্রাসাদ, সেনার সদর দফতর ও খার্তুম বিমানবন্দর সেনাবাহিনীর দখলেই রয়েছে ।
প্রসঙ্গত,সুদানের স্বৈরশাসক ওমর আল-বশিরের রাষ্ট্রপতিত্বের অবসানের পর সেনাবাহিনী ও আধাসামরিক বাহিনীর মধ্যে উত্তেজনা শুরু হয় ।
দারফুর অঞ্চল থেকে আসা “জানজাওয়েদ” নামে পরিচিত সেনাবাহিনী এবং মিলিশিয়াদের মধ্যে ২০১৯ সালের পর থেকে অনেক উত্তেজনা দেখা গেছে । ওমর আল-বশিরের পতনের পর ২০২১ সালের অক্টোবর থেকে সুদানের দারফুর অঞ্চলে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছে । তিন দশকের স্বৈরশাসনের পর ওমর আল-বশিরকে উৎখাত করা সুদানীরা দুই বছর পরও তাদের গণতান্ত্রিক দেশ গঠনের স্বপ্ন পূরণ করতে পারেনি ।।