এইদিন ওয়েবডেস্ক,কায়াহ(মিয়ানমার),২৬ এপ্রিল : মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী গত মাসের শেষ থেকে কায়াহ রাজ্যের ডি মোসোর পূর্ব দিকে ডোটা মাই অঞ্চলের ৩ টি গ্রাম পুড়িয়ে দিয়েছে এবং সম্পূর্ণ ধ্বংস করে দিয়েছে । মার্চের শেষের থেকে এপ্রিলের শুরু পর্যন্ত সামরিক পরিষদ ওই ৩ গ্রামে আকাশ থেকে বোমাবর্ষণ করে। ভারি অস্ত্র নিয়ে গুলি করার পর সামরিক পরিষদের সৈন্যরা নিজেরাই অগ্নিসংযোগ করে বলে মিডিয়াকে জানিয়েছে কায়াহ রাজ্যের বাসিন্দারা । সামরিক পরিষদের এই হামলার জেরে স্থানীয় বাসিন্দারা গ্রাম ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে । বর্তমানে ডং ইয়েখুসহ ওই তিন গ্রাম মানুষ শূণ্য ।
কেএসসিসি মানবাধিকার কমিটির চেয়ারম্যান ইউ বন্যা সালউইন টাইমসকে বলেছেন যে সামরিক কাউন্সিলের সৈন্যরা স্থানীয়দের কাছ থেকে খাবার কেড়ে নিয়ে যায় এবং এলাকা থেকে যাওয়ার আগে পরিবহন করা যায় না এমন জিনিসপত্র পুড়িয়ে দিয়ে যায় ।’ তিনি বলেন, ডি মোসোর পূর্বাঞ্চলের যে সমস্ত জায়গায় যুদ্ধ চলছে না সেখানে সামরিক ক্যাম্পগুলো আক্রমণ করে ধ্বংস করতে যাচ্ছে বলে আমি খবর পেয়েছি । তারা যন্ত্রপাতি ধ্বংস করবে, তারা মানুষের সম্পত্তি ধ্বংস করবে, তারা খাদ্য ধ্বংস করবে, তারা মানুষকে ধ্বংস করবে। এমন কি আমরা দেখেছি যে নিরীহ গ্রামবাসীদের গায়ে পেট্রল ঢেলে পুড়িয়ে মারা হয়েছে । এই সমস্ত নৃশংস কাজগুলো করছে বিএমআর-৫১৫ এবং বিএলআর-১২ বাহিনী ।’ সামরিক অভ্যুত্থানের পরে প্রায় ৩,০০,০০০ জনসংখ্যার কায়াহ রাজ্যের ২,০০,০০০- এরও বেশি স্থানীয় বাসিন্দা পালিয়ে গেছে এবং এখন ওই সমস্ত বাস্তুচ্যুত লোকদের জন্য সাহায্যের প্রয়োজন বলে জানিয়েছেন মানবাধিকার কমিটির চেয়ারম্যান ইউ বন্যা ।
কেএনডিএফের রিপোর্ট অনুযায়ী,কায়াহ রাজ্যে সামরিক পরিষদ দ্বারা ২২৮ জন গ্রামবাসীর বাড়ি ধ্বংস করা হয়েছে, সেইসাথে ২ টি মঠ, ৩ টি স্কুল এবং ডোটা মাই জেলা হাসপাতাল গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে । পলিটিক্যাল প্রিজনার্স অ্যাসিসট্যান্স অ্যাসোসিয়েশন (এএপিপি) জানিয়েছে যে কায়াহ রাজ্যে সামরিক কাউন্সিলের হামলায় ১০৫ জন সাধারণ মানুষ মারা গেছে ।
উল্লেখ্য,২০২০ সালের নভেম্বরের সাধারণ নির্বাচনে অং সান সু চির দল এনএলডি সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করেছিল । কিন্তু ২০২১ সালের পয়লা ফেব্রুয়ারী আং সান সু চি এবং অন্যান্য রাজনৈতিক নেতাদের গ্রেফতার করার পর মিয়ানমারের নিয়ন্ত্রণ নেয় সামরিক জান্তা বাহিনী । সেসময় পরবর্তী এক বছরের জন্য জরুরি অবস্থা জারি করে রাজধানী নেপিডো এবং প্রধান শহর ইয়াঙ্গনে কারফিউ জারি করা হয় । হাজার হাজার মানুষ কয়েক সপ্তাহ ধরে কারফিউ ভেঙে রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ করতে শুরু করে । তারপর থেকেই নিরীহ মানুষদের উপর অমানবিক নির্যাতন চালিয়ে যাচ্ছে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী।।