এইদিন ওয়েবডেস্ক,মঙ্গলকোট(পূর্ব বর্ধমান),১৬ ফেব্রুয়ারী : গত বুধবার বিকেলে পূর্ব বর্ধমান জেলার মঙ্গলকোটের আটঘড়ায় একটি ইঁটভাটার কাছে একটি বাইক ও একটি চারচাকা গাড়ির মুখোমুখি সংঘর্ষ হয় । বাইকে ছিলেন মঙ্গলকোটের লাখুড়িয়া অঞ্চল তৃণমূল সভাপতি কল্যাণপুর গ্রামের বাসিন্দা মফিজুল শেখ ও দলীয় কর্মী তথা বন্ধু লালু শেখ । মৃত্যু হয় লালু শেখের। গুরুতর জখম হন মফিজুল। যদিও ঘটনাটি নিছক দুর্ঘটনা হিসাবে মনে করছেন না হতাহতদের পরিবার । তাদের দাবি ঘটনাটি ‘পরিকল্পনামাফি খুন’ । পরের দিন বৃহস্পতিবার মৃতের ছেলে সাহিন শেখ বেশ কয়েকজন তৃণমূল নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে থানায় এফআইআর দায়ের করেন । তার ভিত্তিতে ঘাতক গাড়ির চালক সঞ্জয় হাঁসদা (২৩)কে গ্রেফতার করেছে মঙ্গলকোট থানার পুলিশ । ধৃতের বাড়ি মঙ্গলকোটের চাণক গ্রামে। শনিবার রাতে মঙ্গলকোটের গতিষ্ঠা বাসস্ট্যান্ড থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয় । আজ রবিবার ধৃতকে কাটোয়া মহকুমা আদালতে তোলা হলে পুলিশ হেফাজতে পাঠানো হয় ।
এছাড়াও অভিযুক্তদের মধ্যে রয়েছে তৃণমূল কংগ্রেসের মঙ্গলকোটের ব্লক কমিটির সম্পাদক চন্দন সরকার এবং লাল্টু শেখ, চৌধুরী আব্বাস আহমেদ, রেজাউল মুন্সি সহ আরও কয়েকজন তৃণমূল কর্মী । এই ঘটনায় তৃণমূল কংগ্রেসের গোষ্ঠী কোন্দল ফের প্রকাশ্যে এল । যদিও চন্দন সরকার বলেছেন, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ওই দুর্ঘটনাকে খুন বলে অভিযোগ তুলে আমাদের ফাঁসানো হচ্ছে।’
জানা গেছে,বুধবার মফিজুল শেখ একটি মামলায় হাজিরা দিতে গিয়েছিলেন কাটোয়া আদালতে । বিকেলে নিজের বাইকে লালু শেখকে পিছনে চাপিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন । আটঘড়ায় একটি ইঁটভাটার সামনে তাদের বাইক ও একটা চারচাকা গাড়ির মুখোমুখি সংঘর্ষ হয় । যদিও অভিযোগকারী সাহিন শেখের দাবি, লালু শেখ এবং মফিজুল শেখ উল্টে পড়ে গেলে দুজনের উপর ২২-২৩ জন লাঠিসোঁটা ও অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে চড়াও হয়। আর মারধরের ফলেই লালু শেখের মৃত্যু হয়। তিনি আরো দাবি করেছেন যে দুর্ঘটনার আগে বুধবার দুপুর নাগাদ চন্দন সরকার, লাল্টু শেখ, চৌধুরী আব্বাস আহমেদ, রেজাউল মুন্সি সহ কয়েকজন মিলে একটি গোপন বৈঠক করেছিল বলে তারা জানতে পেরেছেন ।
জানা গেছে,মৃতের ছেলের কাছ থেকেই অভিযোগ পাওয়ার পর ঘটনাস্থলের আশেপাশের সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখে পুলিশ । তার মধ্যে ইঁটভাটার সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ থেকে পুলিশ ঘাতক গাড়িটিকে চিহ্নিত করে। পরে চাণক গ্রাম থেকে সাদা রঙের ওই চারচাকা গাড়িটি আটক করা হয় । পুলিশ জানতে পারে যে ঘটনার সময় সঞ্জয় গাড়িটি চালাচ্ছিল । যেকারণে পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে।
জানা গেছে, ধৃত সঞ্জয় ঘটনার সময় চারচাকা গাড়িটি চালানোর কথা স্বীকার করলেও সে দাবি করেছে যে তাকে পাওনা টাকা দেওয়ার অছিলায় ডেকে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। কে বা কারা সেদিন চারচাকা গাড়িটি করে যেতে বলেছিল তদের নামও পুলিশের কাছে জানিয়েছেন ধৃত সঞ্জয়। পুলিশ তার মোবাইল ফোনটি বাজেয়াপ্ত করেছে । ধৃতকে জেরা ও মোবাইল ফোন খতিয়ে দেখে অভিযোগের সত্যতা যাচাই করার চেষ্টা করছে পুলিশ ।।

