এইদিন ওয়েবডেস্ক,মঙ্গলকোট(পূর্ব বর্ধমান),১৫ জুলাই : পূর্ব বর্ধমান জেলার মঙ্গলকোটের দলীয় নেতা অসীম দাসের খুনীরা ৩ দিনের মধ্যেই গ্রেফতার হবে বলে আশ্বাস দিয়ে গিয়েছিলেন বীরভূম জেলার তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল । অবশেষে তাঁর এই আশ্বাসের ২৪ ঘন্টার মধ্যেই ২ জনকে গ্রেফতার করল মঙ্গলকোট থানার পুলিশ । পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতদের নাম সাবুল শেখ ও সামু শেখ । ধৃতদের মধ্যে প্রথমজনের বাড়ি মঙ্গলকোট থানার কল্যাণপুর গ্রামে । দ্বিতীয়জন কোটালঘোষ গ্রামের বাসিন্দা । সাবুল ও সামু দু’জনেই সক্রিয় তৃণমূল কর্মী বলে পরিচিত । বৃহস্পতিবার ধৃতদের কাটোয়া মহকুমা আদালতে তুলে ১২ দিনের জন্য নিজেদের হেফাজতে চেয়ে আবেদন জানায় পুলিশ।
সোমবার সন্ধ্যায় বাড়ি ফেরার পথে খুন হন মঙ্গলকোট ব্লকের লাখুড়িয়া অঞ্চল তৃণমূল সভাপতি সিউর গ্রামের বাসিন্দা অসীম দাস । তাঁর বাম দিকের বুকে খুব কাছ থেকে গুলি করে দুষ্কৃতিরা । পরের দিন ঘটনাস্থলে পরিদর্শনে আসে সিআইডির ৫ সদস্যের প্রতিনিধিদল । তাঁরা কিছু নমুনা সংগ্রহ করে নিয়ে যান । তার ঠিক কয়েক ঘন্টার মধ্যেই গঠন করা হয় বিশেষ তদন্তকারী কমিটি বা ‘সিট’ । এদিন ঘটনাস্থলে তদন্তে আসে ফরেনসিক দল । ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ চিত্রাক্ষ সরকার ও অভিজিৎ মান্ডির নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের ওই দলটি সিউর গ্রাম ঢোকার মুখে ঘটনাস্থলে এসে মাপজোখ করেন । পাশাপাশি তাঁরা ওই দিনের ঘটনাক্রম অভিনয় করে দেখান ।
খুনের ঘটনার পর থেকেই স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব দাবি করেছিলেন এই ঘটনায় বিজেপি জড়িত । কিন্তু মৃতের পরিবারের লোকজনই সেই দাবিকে কার্যত নস্যাৎ করে দেন । তাঁদের অভিযোগ ছিল গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরেই খুন হয়েছেন অসীমবাবু । অবশেষে তাঁদের সেই দাবিই সত্যি প্রমাণিত হল । অবশ্য ঘটনার পর প্রথম দিকে বিজেপি জড়িত থাকার কথা বললেও বুধবার সিউর গ্রামে নিহত দলীয় নেতার বাড়িতে এসে অনুব্রত মণ্ডল স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে গিয়েছিলেন, ‘অপরাধীরা যে দলেরই হোক ছাড়া হবে না । তিন দিনের মধ্যে গ্রেফতার করবে পুলিশ ।’ আর তাঁর এই আশ্বাসের কয়েক ঘন্টার মধ্যেই পুলিশের জালে ধরা পড়ল ২ তৃণমূল কংগ্রেস কর্মী । যদিও ধৃত ধৃত সাবুল শেখের দাবি তাদের মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হচ্ছে ।
তবে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে,ওই খুনের ঘটনার সঙ্গে তাদের প্রত্যক্ষ যোগের প্রমাণ পাওয়া গেছে । টানা জেরার পর সাবুল শেখ ও সামু শেখ নিজেদের জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে বলে দাবি পুলিশের । মঙ্গলকোটের তৃণমূল নেতাকে খুনের ঘটনায় আর কেউ জড়িয়ে আছে কিনা বা সুপারি কিলারকে কাজে লাগানো হয়েছিল কিনা তা ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করে জানার চেষ্টা করছে তদন্তকারী আধিকারিকরা ।।