এইদিন ওয়েবডেস্ক,ইতালি,০৬ ফেব্রুয়ারী : ইতালির সিসিলিয়ান শহরের দুটি প্রাচীন উদ্যানের মধ্যে একটি, কাতানিয়ার (Catania) ভিলা বেলিনির(Villa Bellini) পৌর বাগান । ওই উদ্যানের মধ্যে সাত মিশরীয় যুবকের একটি দল দ্বারা গণধর্ষিতা হয়েছে একটি ১৩ বছর বয়সী ইতালিয় মেয়ে । জানা গেছে, জেলা এবং জুভেনাইল প্রসিকিউটর অফিসের নির্দেশে ইতিমধ্যেই ওই সাত ধর্ষককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ । ধৃতদের মধ্যে তিনজন নাবালক । গ্রেপ্তারি থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য সপ্তম ওয়ান্টেড যুবক তল্পিতল্পা বেঁধে পালানোর মতলব করেছিল । কিন্তু মোবাইল ফোনের সূত্রে তার অবস্থান চিহ্নিত করার পর পুলিশ তাকে পিয়াজা দান্তে এলাকা থেকে পাকড়াও করে ।
তেরো বছর বয়সী নাবালিকার উপর নারকীয় অত্যাচার চালানো হয় গত ৩০ জানুয়ারী সন্ধ্যায় । ক্যাটানিয়ার প্রাদেশিক কমান্ডের কারাবিনিয়ারি দ্বারা প্রদত্ত তথ্যের এফআইআর অনুসারে, মেয়েটি এবং তার সতেরো বছর বয়সী প্রেমিকের সাথে ভিলা বেলিনির মিউনিসিপ্যাল গার্ডেনের বাথরুমের কাছাকাছি প্রায় নির্জন স্থানে বসে গল্প করছিল । সেই সময়ে ওই মুসলিম শরণার্থী যুবকের দল সেখানে আসে এবং তাদের হুমকি দেয় । তারা মেয়েটির প্রেমিককে মারধর করতে করতে দূরে টেনে নিয়ে যায় । তারপর দুই মুসলিম কিশোর মিলে মেয়েটিকে প্রথমে ধর্ষণ করে । বাকি পাঁচজন তখন পাহাড়া দিচ্ছিল । এরপর বাকি মুসলিম যুবকর মিলে মেয়েটির উপর উপর্যুপরি নারকীয় অত্যাচার চালায় । আতঙ্কিত এবং যন্ত্রণায় কাতর মেয়েটি কোনো ভাবে নিজেকে মুক্ত করে তার প্রেমিকের সাথে সেখান থেকে পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়।
রিপাব্লিকার রিপোর্ট অনুসারে,নির্যাতিতা কিশোরী ও তার প্রেমিক সাহায্যের জন্য চিৎকার করেছিল কিন্তু কেউ তাদের সাহায্যে করতে এগিয়ে আসেনি । পরে ওই দু’জনকে নিকটবর্তী ভায়া ইটনিয়ায় কিছু পথচারী উদ্ধার করেছিল ৷ এরপর মেয়েটি তার প্রেমিকের সাথে গিয়ে কাতানিয়া পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করে । অভিযোগ পেতেই ঘটনার তদন্তে নেমে ভিলা বেলিনির ভিতরে লাগানো ভিডিও নজরদারি ক্যামেরার ভিডিও দেখে ধর্ষকদের চিহ্নিত করে পুলিশ । পাশাপাশি ইনভেস্টিগেটিভ ইউনিটের কারাবিনিয়ারি এবং বৈজ্ঞানিক তদন্ত বিভাগের সহকর্মীরা বিভিন্ন জৈবিক চিহ্ন সংগ্রহ করে ঘটনাস্থল থেকে । পরে ৭ ধর্ষককে পুলিশ গ্রেফতার করে আদালতে তুললে তাদের জেল হেফাজতে পাঠানো হয় । তার মধ্যে তিনজনকে কাতানিয়া পিয়াজা লানজা কারাগারে, একজনকে গৃহবন্দী এবং বাকি তিনজনকে কাতানিয়া প্রাথমিক অভ্যর্থনা কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
যদিও এই ঘটনাটি ইতালির তথাকথিত সেকুলার রাজনীতিবিদদের নজরে পড়েনি । কাইভানো এবং পালেরমোর সাম্প্রতিক ঘটনাগুলির বিষয়েও তারা বিশেষ পাত্তা দেয়নি । প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি নির্যাতিতা কিশোরীর পাশে থাকার বার্তা দিয়ে বলেছেন,’খ্রিস্টান অল্পবয়সী আরও একটি মেয়েকে যৌন সহিংসতার শিকার হতে দেখতে হল আমাদের । আমি তার এবং তার পরিবারের সাথে আমার সংহতি প্রকাশ করে বলতে চাই যে ন্যায়বিচার হবে ।’
ইতালির উপ-প্রধানমন্ত্রী মাত্তেও সালভিনি এই ঘটনায় চরম ক্ষিপ্ত হয়েছেন । তিনি দেশের কথিত সেকুলার রাজনৈতিক নেতাদের উদ্দেশ্য বলেছেন,’আপনারা ‘সহনশীলতা’ বা ‘ত্রুটি’ সম্পর্কে আমার সাথে কথা বলতে আসবেন না । এই ধরনের ভয়াবহতার জন্য কোনো ক্ষমা হতে পারে না,এর শুধুমাত্র একটি প্রতিকার হল রাসায়নিক নির্মূল । লীগ যে প্রস্তাব পেশ করেছে তা যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ভোট দেওয়ার জন্য আমি বিশ্বাস করি।’
সালভিনি প্রিমিয়ার লিগের আঞ্চলিক কমিশনার এবং এমইপি অ্যানালিসা টারডিনো ধর্ষকদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির জন্য আহ্বান জানিয়ে বলেছেন,’আমরা এই ধারণায় দৃঢ় রয়েছি যে ধর্ষক এবং পেডোফাইলের জন্য রাসায়নিক নির্গমন, অনুরূপ পর্বের জন্য যাবজ্জীবন কারাদণ্ড, সেইসাথে আমাদের শহরগুলিতে আরও বেশি নিরাপত্তা প্রয়োজন ৷ অবিলম্বে বিদেশিদের প্রত্যাবাসন করতে হবে । মিশরে কখনই এমন আচরণ করতে দিত না। আমাদের শিশুদের নিরাপত্তা ইতালি জুড়ে একটি অগ্রাধিকার হতে হবে ।’।