এইদিন ওয়েবডেস্ক,নোয়াখালী,১৯ অক্টোবর : পেট চিরে ভিতরে ‘ইয়াবা’ ট্যাবলেট ভরে এনে পাচার করতে গিয়ে হাতেনাতে ধরা পড়ে গেল বাংলাদেশের নোয়াখালীর দুই রোহিঙ্গা । অপারেশনের পর তাদের পেটে থেকে মিলল ১২০০ পিস ‘ইয়াবা’ ট্যাবলেট । নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলায় অভিযান চালিয়ে দুই রোহিঙ্গাসহ চারজনকে গ্রেফতার করেছে বাংলাদেশ পুলিশ । ধৃতদের মধ্যে দু’জন মহিলাও রয়েছে । ধৃতরা হল টেকনাফের পশ্চিম লেদারটাল রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ২৫৮ নম্বর কক্ষের জাহিদুল ইসলাম (২৯), লেদা এলএমএস ক্যাম্পের ১৪১ নম্বর কক্ষের রফিক বাইলা (৪০), বেগমগঞ্জের রসুলপুর এলাকার আলী আক্কাস মিয়ার নতুন বাড়ির আবদুর রহিমের স্ত্রী কামরুন নাহার (২৫) ও একই পরিবারের ফরহা হোসেনের স্ত্রী বিবি আয়েশা (২৩)।
ধৃতদের মধ্যে গ্রেফতার দুই রোহিঙ্গার পেট থেকে ১২০০ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার করা হয়েছে । পাশাপাশি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে দুটি মোবাইল, একটি মোটরসাইকেল ও একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশা ।আজ বৃহস্পতিবার সকালে ধৃত ৪ জনের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা দায়ের করে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, দুই রোহিঙ্গা কক্সবাজার থেকে পেট চিরে ভিতরে বিশেষ কায়দায় ‘ইয়াবা’ এনে নোয়াখালীর বিভিন্ন স্থানে পৌঁছে দিত । বুধবার তারা ইয়াবার একটি চালান নিয়ে বামে নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে গিয়েছিল । কিন্তু গোপন সূত্রে খবর পেয়ে রসুলপুর এলাকায় অভিযান চালায় পুলিশ।অভিযানে আলী আক্কাস মিয়ার বাড়ি থেকে ৩,৩০০ পিস ইয়াবাসহ দুই মহিলা ও দুই রোহিঙ্গা যুবককে আটক করা হয়। পরে জিজ্ঞাসাবাদে তারা স্বীকার করেন পেটের ভিতর আরও ইয়াবা রয়েছে । এরপর তাদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গিয়ে এক্সরে করা হয় । এক্সরেতে তাদের পেটের ভিতরে ইয়াবা থাকার প্রমাণ মিললে দু’জনের অস্ত্রোপচার করে পেট থেকে আরও ১২০০ পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়।
প্রসঙ্গত,থাইল্যান্ডে তৈরি ‘ইয়াবা’ ট্যাবলেটকে বলা হয় ‘পাগলা ঔষধ’ । মেথঅ্যাম্ফিটামিন ও ক্যাফেইন এর মিশ্রণে তৈরি এই ট্যাবলেট খেলে ব্যাপক নেশা হয় । কখনো কখনো এর সাথে হেরোইন মেশানো হয়। এই মাদক ট্যাবলেটটি থাইল্যান্ডে বেশ জনপ্রিয়। পার্শ্ববর্তী দেশ বার্মা থেকে এটি চোরাচালান হয়ে বাংলাদেশ, সৌদি আরব, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে সরবরাহ হয় । বাংলাদেশে ব্যাপক জনপ্রিয়তা রয়েছে এই ট্যাবলেটের । চোরাই পথে নিয়ে আসা এই ট্যাবলেট থেকে প্রচুর উপার্জন করে চোরাচালানকারীরা । মিয়ানমার থেকে রোহিঙ্গা উদ্বাস্তুরা আসার পর মূলত বিভিন্ন ক্যাম্পে বসবাসকারী রোহিঙ্গারা এখন ‘ইয়াবা’ ট্যাবলেট বিক্রির পেশায় ব্যাপকভাবে যুক্ত হয়ে পড়েছে ।।