এইদিন ওয়েবডেস্ক,সোয়াত(পাকিস্তান),২৫ এপ্রিল : পাকিস্তানের সোয়াতের কাবালে একটি থানায় বিস্ফোরণে পুলিশ সদস্যসহ ১২ জন নিহত হয়েছেন । আহত হয়েছে আরও অন্তত ৫৭ জন সাধারণ মানুষ । সোমবার সকাল সকাল ৮টা ২০ মিনিট নাগাদ থানার ভেতরে বিস্ফোরণটি ঘটে । খাইবার পাখতুনখোয়া কাউন্টার-টেররিজম ডিপার্টমেন্টের (সিটিডি) প্রাঙ্গনের অধীনে পুলিশ স্টেশনের ভিতরে বিস্ফোরণের কয়েক ঘন্টা আগে, সিটিডি লাকি মারওয়াতে একটি অভিযান চালিয়েছিল পুলিশ । যেখানে তিন সন্দেহভাজন সন্ত্রাসবাদী নিহত হয়েছিল । আর তারপরেই থানায় বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটায় এটা নাশকতা বলে মনে করছেন অনেকে । তবে ডিআইজি মালাকান্দ নাসির মেহমুদ সাতি সোমবার গভীর রাতে সাংবাদিকদের বলেছিলেন যে ঘটনাটি সন্ত্রাসী কার্যকলাপ বা আত্মঘাতী বিস্ফোরণের ফলে নয়, প্রাথমিক তদন্তে এটি অবহেলার লক্ষণ বলে মনে হচ্ছে । তিনি বলেন, থানা চত্বরে কাউন্টার টেরোরিজম ডিপার্টমেন্টের পুরনো অফিসের ভেতরে অস্ত্র স্টোরেজ এলাকায় বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে । যে তথ্যপ্রমাণ এসেছে তার ভিত্তিতে তদন্ত করা হচ্ছে বলে জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা ।
সাইদু টিচিং হাসপাতালে (এসটিএইচ) চিকিৎসাধীন আহত পুলিশ কর্মকর্তা ইমদাদ খান জানান, অন্যান্য কর্মকর্তাদের সাথে তিনি যখন রান্নাঘরে বসেছিলেন তখন ভবনটিতে একটি প্রচণ্ড বিস্ফোরণ ঘটে এবং রান্নাঘরের একটি অংশ ধসে পড়ে । এক সিনিয়র পুলিশ অফিসার সহ ২০ জন পুলিশকর্মী ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে যায় । তিনি বলেন, ‘বিস্ফোরণের পর প্রচণ্ড গুলিবর্ষণ হয় এবং বেশ কয়েকটি বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায় ।’ এদিকে বিস্ফোরণের পরেই চিকিৎসা কেন্দ্রগুলোতে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয় এবং উদ্ধারকারী ১,১২২ টি দল ঘটনাস্থলে পাঠানো হয় ।
অন্যদিকে পাকিস্তানের লাক্কি মারওয়াতে অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল মুকবরব খানকসহ ৩ জন সন্দেহভাজন চরমপন্থী নিহত হয়েছে । পুলিশ জানিয়েছে,গোয়েন্দা সংস্থায় কর্মরত প্রাক্তন ওই সামরিক কর্মকর্তা ঈদের দ্বিতীয় দিন নিজের বাড়ির একটি ঘরে অতিথিদের অভিনন্দন জানানোর সময় অজ্ঞাত অস্ত্রধারীরা ঘরে ঢুকে তাকে লক্ষ্য করে গুলি চালায় । অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল মকরব খানকে হত্যা করার সময় ঘরে উপস্থিত অন্যান্য ব্যক্তিদের বন্দুকের জোরে তাদের পনবন্দি করে এবং হামলাকারীরা ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায় । আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা তাদের পিছু ধাওয়া করলেও তারা মোটরসাইকেলে করে মাজারের দিকে পালিয়ে যেতে সক্ষম হয় ।
অন্য একজন পুলিশ কর্মকর্তা একদিন বলেছিলেন যে বান্নু সিটিডি কর্মকর্তারা চরমপন্থীদের আস্তানার বিষয়ে তথ্য পেয়েছিলেন এবং তারা গোপন আস্তানায় পৌঁছলে চরমপন্থীরা তাদের লক্ষ্য করে গুলি চালাতে শুরু করে । কিন্তু তার আগে থেকেই প্রস্তুত ছিল প্রায় ১০ জন সশস্ত্র চরমপন্থী । সিটিডি কর্মকর্তা বলেছেন যে নুমান সহ ৩ চরমপন্থী নিহত এবং একজন তাহসিনুল্লাহ নামে এক চরমপন্থী আহত হয়েছে ।
তিনি আরও জানান,অন্যান্য চরমপন্থীরাও আহত হয়েছে এবং তারা এলাকায় উপস্থিত থাকতে পারে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে । সেই কারণে পুলিশ ও নিরাপত্তা বাহিনী এলাকায় অভিযান শুরু করেছে।
সিটিডি পরিদর্শক জাভেদ এবং কনস্টেবল ইরফান গুরুতর আহত হয়েছেন । তাদের সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল বান্নু এবং খলিফা গুল নওয়াজ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছে ।।