প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়,বর্ধমান,০৩ মার্চ : প্রসূতি ও সদ্যোজাতকে হাসপাতাল বা বাড়িতে পৌছনোর জন্য নিশ্চয়যানের অনিশ্চয়তা কাটাতে চালু হয়েছিল ১০২ অ্যাম্বুলেন্স পরিষেবা। সেই পরিষেবা দেওয়া বন্ধ রেখে বিক্ষোভে সামিল হয়েছেন পরষেবার স্থঙ্গে যুক্ত পূর্ব বর্ধমান জেলার ড্রাইভার ও টেকনিশিয়ানরা।আন্দোলনের জেরে শুক্রবার জেলার ৬২ টি ১০২ অ্যাম্বুলেন্সের চাকা ঘুরলো না। সুপার ভাইজার পদত্যাগ না করলে অ্যাম্বুলেন্স পরিষেবা স্বাভাবিক হবে না বলে আন্দোলনকারীরা চরম হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন।
বর্ধমান মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল, কাটোয়া মহকুমা হাসপাতাল,কালনা মহকুমা হাসপাতাল সহ বিভিন্ন ব্লক স্বাস্থ্য কেন্দ্র এবং উপ স্বাস্থ্য কেন্দ্রে মেলে ১০২ অ্যাম্বুলেন্সের জরুরি পরিষেবা।এমন ৬২ টি অ্যাম্বুলেন্সে পরিষেবা দেওয়ার সাথে যুক্ত রয়েছেন ১৮৪ জন কর্মী। কি কারণে,কি দাবি আদায়ের জন্য পরিষেবা দেওয়া বন্ধ রেখে আন্দোলন ? এর উত্তরে আন্দোলনকারী চঞ্চল শীল,সেখ রফিকুল জানান, সুপার ভাইজার গৌতম কুণ্ডু তাদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেছেন। আট ঘন্টার জায়গায় তাদের বারো ঘন্টা ডিউটি করতে বাধ্য করা হয়। অতিরিক্ত ডিউটি করতে না চাইলে তাদের কাজ থেকে তাড়িয়ে দেবার হুমকিও দেওয়া হয়। এইসব নিয়ে অনেক আগে থেকেই ক্ষোভের আগুন জ্বলছিল। গত ১ মার্চ দুর্ঘটনায় একটি ১০২ অ্যাম্বুলেন্সে থাকা টেকনিশিয়ানের মৃত্যু ও চালকের জখম হওয়ার ঘটনার পর সেই আগুনে ঘৃতাহুতি পড়ে ।
এই প্রসঙ্গে আন্দোলনকারীরা বলেন,গত ১ মার্চ অ্যাম্বুলেন্সে রোগীকে গন্তব্যে পৌঁছে ফেরার পথে পথ দুর্ঘটনায় গুরুতর জখম হন টেকনিশিয়ান রামকৃষ্ণ দাস ও অ্যাম্বুলেন্স চালক। তাদের গুরুতর জখম অবস্থায় কলকাতার হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। চিকিৎসারত অবস্থায় রামকৃষ্ণ দাস মারা যান। অভিযোগ সেই সময়ও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়নি সুপার ভাইজার। তাই সুপার ভাইজারকে অবিলম্বে বরখাস্ত করতে হবে এই দাবিনিয়ে বৃহস্পতিবার রাত থেকে ১০২ অ্যাম্বুলেন্স পরিষেবা বন্ধ রেখে চালক ও টেকনিশিয়ানরা আন্দোলনে নেমেছেন। যদিও তারা দাবী করেছেন,জরুরী রেফার পরিষেবা তারা চালু রেখেছেন। তবে অন্যান্য সমস্ত পরিষেবা বন্ধ আছে। যতক্ষণ তাদের দাবী না মিটবে ততক্ষণ তারা গাড়ি চালাবে না বলে আন্দোলনকারীরা সাফ জানিয়ে দিয়েছেন ।
সুপার ভাইজার গৌতম কুণ্ডুর সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি অবশ্য এইসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।পাল্টা অভিযোগে তিনি জানান,ড্রাইভাররা অবৈধভাবে রোগীর পরিবারের কাছ থেকে টাকা নেয়। আমি তার বিরুদ্ধে হওয়ায় আমাকে টার্গেট করা হচ্ছে“। জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রণব রায় দ্রুত পরিষেবা স্বাভাবিক করার ব্যাপারে পদক্ষেপের কথা জানিয়েছেন।।