এইদিন ওয়েবডেস্ক,কোচবিহার,১৮ জুলাই : বাংলাদেশের চট্টগ্রামের শরণার্থী শিবির থেকে পালিয়ে ১২ থেকে ১৩ লক্ষ রোহিঙ্গা পশ্চিমবঙ্গ সীমান্ত দিয়ে ভারতে অনুপ্রবেশ করেছে বলে দাবি করলেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিক । বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিতে বাংলা ভাষীদের হেনস্থা করা হচ্ছে বলে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি এবং তৃণমূল কংগ্রেসের মদতপুষ্ট সংগঠন ‘বাংলা পক্ষ’ যখন তেড়েফুঁড়ে আসরে নেমেছে, সেই সময় নিশিথ প্রামানিকের এই মন্তব্য যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন অনেকে । আজ সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলার সময় তিনি বলেন, ‘আজকে আপনারা যদি একটা পরিসংখ্যান দেখেন তাহলে বুঝতে পারবেন কি হারে অনুপ্রবেশ হচ্ছে কোচবিহারে । ২০১৪ সালে বাংলাদেশের চট্টগ্রামে শরণার্থী শিবির থেকে ফেরি নদী পেরিয়ে যখন রোহিঙ্গারা এসে বসবাস শুরু করেছিল সেই সময় রোহিঙ্গাদের সংখ্যা ছিল ১৪ থেকে ১৫ লক্ষ । আজকে যদি সরেজমিনে সেখানে গিয়ে তদন্ত করেন তাহলে দেখবেন যে সেখানে মাত্র দু থেকে আড়াই লক্ষ রোহিঙ্গা রয়েছে । এই রোহিঙ্গারা বাংলায় কথা বলতে পারে, বাঙ্গালীদের মতো দেখতে, বাঙ্গালীদের মতো আচার আচরণ, বাঙ্গালীদের মত পোশাক পরিচ্ছদ, স্বাভাবিকভাবেই তারা বাঙালির পরিচয় দিয়ে ভারতের বিভিন্ন শহরের ছড়িয়ে পড়েছে । তাহলে ১২ থেকে ১৩ লক্ষ রোহিঙ্গা কোথায় গেল ? তারা নিশ্চয়ই জাপান বা চীনে যায়নি । বা আমেরিকায় চলে যায়নি । এদের সেফ হাউস পশ্চিমবঙ্গ ।’
তিনি আরও বলেন,’প্রায় সাড়ে ৪৫০ কিলোমিটার সীমান্ত এখনো মমতা ব্যানার্জি খুলে রেখে দিয়েছে এদেরকে আহ্বান করার জন্য । এই পথেই তারা অনুপ্রবেশ করেছে । এরাজের বিভিন্ন তৃণমূল কংগ্রেসের পার্টি অফিস থেকে তারা ভোটার কার্ড, রেশন কার্ড এবং আধার কার্ড পেয়ে গেছে । সেই ভুয়া নথিপত্র নিয়ে তারা ভারতের বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে গেছে এবং বিভিন্ন অসামাজিক কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে।’
ভিন রাজ্যে বাংলাভাষীদের হেনস্থা করা হচ্ছে বলে মমতা ব্যানার্জি যে অভিযোগ করছেন তাকে মিথ্যাচার বলেছেন নিশীথ প্রামানিক । এই বিষয়ে তিনি বলেন,
‘মুখ্যমন্ত্রী সম্পূর্ণ মিথ্যা কথা বলছেন । যারা দীর্ঘদিন ধরে পাঞ্জাব, হরিয়ানা, রাজস্থানে থাকে তারা উত্তরবঙ্গ হোক বা দক্ষিণবঙ্গের হোক, তারা পশ্চিমবঙ্গের বাঙ্গালীদের থেকে অনেক ভালো হিন্দিতে কথা বলতে পারে । তাই তাদেরকে বাংলায় কথা বলার জন্য চিহ্নিত করেছে এটা বলা সম্পূর্ণ ভুল । কিন্তু যারা ভুয়া নথিপত্র নিয়ে বসবাস করছে সেটা ভারতে যে প্রান্তই হোক না কেন তা বেআইনি ।’
তিনি বলেন,’আমরা দেখেছি যে বাংলাদেশী অনুপ্রবেশকারীরা কোচবিহারকে করিডর করে নিজের দেশে ফেরত যেতে চাইছে । তারা পুলিশের হাতে ধরাও পরেছে । মাথাভাঙা, কোচবিহার কোতোয়ালি,দিনহাটা থানা এলাকায় বহু বাংলাদেশী পরিযায়ী শ্রমিক ধরা পড়েছে । তবে এটা নিশ্চিত যে বাংলাদেশ থেকে বহু অনুপ্রবেশ হয় তাতে সে যে কারণেই হোক । তারা ভারতেত বিভিন্ন শহরগুলোকে টার্গেট করে । যদিও তাদের ফার্স্ট সেফ হাউস পশ্চিমবঙ্গ । যেখানে আসার পর ভোটার কার্ড, আধার কার্ড, রেশন কার্ড পেয়ে যায় । আর সেগুলোকে হাতিয়ার করেই তারা দিল্লি, গুজরাট, ব্যাঙ্গালোর প্রভৃতি শহরগুলোতে ছড়িয়ে পড়ে ।’
তিনি বলেছেন,’নিশ্চিত ভাবে ভারত সরকারের এটা অধিকার রয়েছে যে যারা ভূয়ো নথিপত্র নিয়ে বেআইনিভাবে এদেশে বসবাস করছে তাদের চিহ্নিত করে ফেরত পাঠানো। এই কাজ ভারত সরকার করে চলেছে এবং অবিরত করবেও । যারা এই ধরনের নথিপত্র নিয়ে ভারতে বসবাস করছে তাদের নিশ্চিত ভাবে ভারত থেকে চলে যেতে হবে ।’।

